রেসিপিঃ ইলিশ পোলাউ (স্পেশাল)
---
সাহাদাত উদরাজী
ইলিশ পোলাউ, আমাদের দেশের একটা নামকরা খাবার। আমি মনে করি এই খাবারটা আমরা সারা দুনিয়া ছড়িয়ে দিতে পারি এবং এই খাবারের প্যাটেন্ট বা কপি রাইট আমরা দাবী করতে পারি। ইলিশ মাছ যেহেতু আমাদের নিজস্ব মাছ তাই এই কাজটা আমরা সহজেই করতে পারি। সারা দুনিয়ার মানুষ ইলিশের স্বাদ জানবে, সেই সাথে জানবে আমাদের খাবারের বাহার।
ইলিশ, আমাদের সাদা সোনা!
চলুন কথা কম বলে ইলিশ পোলাউ রান্না দেখে ফেলি, আপনাদের যাদের পোলাউ রান্নার সামান্য অভিজ্ঞতা আছে, উনাদের জন্য এই রান্নাটা তেমন কোন ব্যাপার না!
উপকরনঃ
– ইলিশ মাছের ৬ টুকরা (ইলিশ যত বড় হবে তত স্বাদ লাগবে!)
– পোলাউ চাল, ৭৫০ গ্রাম
(বাটিতে নিন্মের মশলা গুলো মিশিয়ে নিন*)
– পেঁয়াজ বাটা, ২ টেবিল চামচ
– আদা বাটা, দেড় টেবিল চামচ
– রসুন বাটা, ২ চা চামচ
– বাদাম বাটা, ২ টেবিল চামচ
– জিরা গুড়া, হাফ চা চামচ
– জয়ত্রি বাটা, হাফ চা চামচের কম
– গোল মরিচ বাটা, ১ চা চামচ
– চিনি, হাফ চা চামচ
এবং
– টক দই, এক কাপ
– বেরেস্তা, হাফ কাপ
– কয়েকটা কাঁচা মরিচ
অন্যান্য
– লবন (পরিমান মত, প্রথমে কম, পরে যাছাই করে দিতে হবে)
– তেল (দুই ধাপে এক কাপের কম বা সামান্য বেশী)
– পানি (পরিমান মত)
প্রনালীঃ
রান্নার আগেই প্রয়োজনীয় উপকরণ হাতের কাছে নিয়ে নিনঃ
ইলিশ মাছের টুকরা এভাবে কাটুন, ভাল করে পরিস্কার করে টুকরা গুলোতে সামান্য হলুদ ও এক চিমটি লবন মিশিয়ে রাখুন।
* মশলা গুলো (উপরে পরিমান দেয়া হয়েছে) একটা বাটিতে নিয়ে রাখুন বা মিশিয়ে নিন।
টক দই হাতের কাছে রাখুন। (দই না থাকলে দুধ গুলে তাতে এক কর্ক ভিনেগার দিয়েও নিতে পারেন)
বেরেস্তা ভেঁজে হাতের কাছে রাখুন। যারা বেরেস্তা ভাঁজা দেখতে চান, রেসিপিঃ বেরেস্তা (সকল স্বাদের কাজী)
মুলা রান্নাঃ
যে কড়াইতে বেরেস্তা ভাজছেন, সেই গরম তেলেই মশলা গুলো দিয়ে দিন এবং ভাল করে ভাঁজতে থাকুন, হাফ চামচ লবন দিয়ে নিন।
মশলা ভাঁজা হয়ে গেলে তাতে ইলিশ মাছের টুকরা গুলো দিয়ে দিন। কয়েকটা কাঁচা মরিচ দিতে ভুলবেন না।
মাছের এপিট ও পিট করে দিন। তবে আগুন থাকবে মাধ্যম আঁচে।
এবার টক দই দিয়ে দিন।
ঢাকনা দিয়ে মিনিট ৬/৭ মাধ্যম আঁচে রাখুন।
এমন অবস্থায় এসে যাবে।
এবার ইলিশ মাছ গুলো সাবধানে তুলে রাখুন, মাছ যেন ভেঙ্গে না যায়।
মুলত মাছ রান্না হয়েছে, এভাবে মাছ খেয়ে দেখতে পারেন, দারুন। যাই হোক, রেখে এগুতে থাকুন।
মাছ তুলে নেয়ার পর যে ঝোল থাকবে তাতে ধুয়ে রাখা পোলাউএর চাল দিয়ে দিন।
ভাল করে মিশিয়ে নিন।
এবার পরিমান মত পানি দিন। পানির পরিমাণটা এমন হবে যে, চালের উপরে এক ইঞ্চি তবে এটা নির্ভর করে পোলাউ চাল নুতন না পুরাতন তার উপর। এই পর্যায়ে ফাইন্যাল লবন দেখতে হবে, এই পানি গুলোর স্বাদ কটা (লবন একটু বেশী) হতে হবে, লবন দিন।
মাঝারি আঁচে ঢেকে রাখুন।
রান্নাঘর ছেড়ে যাবেন না, এবার তুলে রাখা মাছ গুলো দিয়ে দিন।
বেরেস্তা দিন।
চাল গুলো দিয়ে মাছ ঢেকে দিন।
এবার শহুরে দম দিন, মানে পাতিলের তলায় তাওয়া দিন এবং মাধ্যম আঁচে মিনিট ২০ রাখুন, তবে রান্নাঘরেই থাকুন। মাঝে মাঝে দেখুন, হল কি না, দুই একবার উল্টেও দিতে পারেন। যদি পানি কম হয়ে যায় এবং দেখেন চাল তেমন নরম হয় নাই তখন আরো পানি ছিটিয়ে দিতে পারেন এবং আবারও ঢাকনা দিয়ে রাখতে হবে।
অবশ্যই এমন পর্যায়ে এসে যাবে, বেচে থাকা কিছু বেরেস্তা উপরে ছিটিয়ে দিতে পারেন। পাতিল সহ পরিবেশন করতে পারেন, কারন এই পোলাউ গরম গরম খেতেই মজা। রান্নার পাতিলেই খাবার বেশিক্ষন গরম থাকে! হা হা হা।