কিয়ামতের আলামতসমূহ কি কি?
কিয়ামতের বড় বড় আলামতের সংখ্যা মোট সাতটি। যেগুলো পবিত্র কোরআন ও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। এগুলো সংঘটিত হওয়ার পরই কিয়ামত আরম্ভ হয়ে যাবে। প্রথম আলামত: ইমাম মেহেদী (আ.) এর আত্মপ্রকাশ, যিনি একচ্ছত্র খলিফা হবেন এবং পৃথিবীর সব মানুষকে ইসলামের অধীনে আনায়ন করতঃ ইসলামের বিজয় পতাকা উড্ডয়ন করবেন।
দ্বিতীয়: দাজ্জালের বহিঃপ্রকাশ। এটা তখন ঈমানদারদের জন্য এক চরম পরীক্ষা হবে।
তৃতীয়: হজরত ঈসার (আ.) চতুর্থ আসমান থেকে অবতরণ। যিনি ইমাম মেহেদী (আ.) কে সাহায্য এবং দাজ্জালকে হত্যা করার জন্য অবতরণ করবেন।
চতুর্থ: ইয়াজুজ ও মাজুজের বহিঃপ্রকাশ।
পঞ্চম: দাব্বাতুল আরবদের বহিঃপ্রকাশ।
ষষ্ঠ আলামত: আদন গহ্বর হতে অগ্নিকু- বের হওয়া যা মানুষকে হাশর ময়দানের দিকে একত্রিত করবে।
সপ্তম আলামত: পশ্চিমাকাশ হতে সূর্যোদয়। এ সময় তওবার সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে। এছাড়া ওই সময় তিনটি ভূমিধস সংঘটিত হবে। একটি পৃথিবীর পূর্ব দিগন্তে, দ্বিতীয়টি পশ্চিম দিগন্তে ও তৃতীয়টি আরব উপদ্বীপে।
আরও : একটি আমের দাম দেড় হাজার টাকা!
হাদিস শরিফে কিয়ামতের ছোট ছোট বহু আলামতের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। যেমন হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি হজরত রাসুল পাক (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের নিদর্শনাবলির কতগুলো হচ্ছে- হক্কানি আলেমগণের ইন্তেকালের দরুন ইলমে দীন দুনিয়া হতে উঠিয়ে নেয়া হবে। মূর্খতা, ব্যভিচার ও মদ্যপান বৃদ্ধি পাবে। পুরুষ লোকের সংখ্যা কমে যাবে; স্ত্রী লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। এমনকি পঞ্চাশ জন মহিলার পরিচালক হবে একজন পুরুষ ।(বোখারি ও মুসলিম শরিফ)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- হজরত রাসুলে পাক (সা.) একদা হাদিস বর্ণনা করছিলেন। এমন সময় জনৈক বেদুইন আগমন করল। সে বলল, কিয়ামত কখন হবে? রাসুল (সা.) উত্তরে বললেন, যখন আমানতের খিয়ানত করা হবে তখন তুমি কিয়ামতের অপেক্ষা কর। বেদুইন জিজ্ঞেস করল, আমানতের খিয়ানত কীভাবে হবে? রাসুল (সা.) বললেন, যখন রাষ্ট্রীয় ও সরকারি দায়িত্ব অনুপযুক্ত লোকদের প্রতি অর্পিত হবে তখন তুমি কিয়ামতের অপেক্ষা কর। (বোখারি শরিফ)
অন্যত্র বর্ণিত হয়েছে, হজরত রাসুল (সা.) আরো বলেন, যখন গণিমতের মালকে (জাতীয় সম্পদকে) ব্যক্তিগত সম্পদরূপে ব্যবহার করা হবে। গচ্ছিত মালকে গণিমতের মাল মনে করা হবে। জাকাতকে জরিমানা মনে করা হবে। ইলমে দীন দীনদারির উদ্দেশ্য ব্যতীত অন্য উদ্দেশ্য হাসিল করা হবে। পুরুষ তার স্ত্রীকে আনুগত্য করবে এবং মায়ের সঙ্গে নাফরমানি করবে। বন্ধু-বান্ধবকে নিকটস্থান দেবে কিন্তু পিতা-মাতাকে বহু দূরে সরিয়ে রাখবে। মসজিদগুলোতে শোরগোল করা হবে। ফাসেক ব্যক্তি গোত্রীয় সর্দার সাজবে। জাতির নিকৃষ্টতম ব্যক্তি তাদের নেতা হবে। ক্ষতির ভয়ে মানুষের সম্মান করবে। গায়িকা ও বাদ্য-যন্ত্রাদি ব্যাপকভাবে প্রকাশ লাভ করবে। মদ্যপান বেড়ে যাবে এবং উম্মতের পরবর্তী লোকেরা পূর্ববর্তী লোকদের প্রতি অভিসম্পাত (গালাগাল ও নিন্দাবাদ) করতে থাকবে। সে সময় তোমরা অপেক্ষা কর রক্তিম বর্ণের ঝড়-তুফানের, ভূকম্পনের, ভূধসের, বৃষ্টি এবং সুতা ছেঁড়া দানার মতো একটির পর একটি নির্দশনসমূহের। (তিরমিজি শরিফ)