একরাম হত্যাকে পুঁজি করে ইয়াবা সম্রাটদের মিশন
কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত টেকনাফ পৌরসভার কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা একরামুল হক হত্যাকে পুঁজি করে নিজেদের রক্ষায় মেতেছে ইয়াবা সম্রাটেরা। তাদের মোটা অংকের টাকার মিশনে চলছে নানা অপপ্রচার। যার ফলে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাদক বিরোধী অভিযানে ভাঁটা পড়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক স্ট্যাটাস ও গণমাধ্যমের বিভিন্ন সংবাদে জানা যায়, একরাম খুব সাধারণ ও সৎ জীবন যাপন করতেন। তিনি ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না বলে দাবি বিভিন্ন সংগঠনসহ সুশিল সমাজের প্রতিনিধিদের। তবে বন্ধুকযুদ্ধে নিহত একরামুল হক চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী বলে দাবি র্যাবের।
একরামুলের মাদক ব্যবসার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে স্ত্রী আয়েশা খাতুন শুরু থেকেই বলে আসছেন, তার স্বামীকে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি অডিও ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
স্ত্রী আর তিন ছেলেমেয়ে নিয়ে সাদামাটা জীবন যাপন করা একরামুল হকের অর্থবিত্ত বলতে তেমন কিছু ছিল না। নির্বাচন কমিশনে দেয়া হলফনামায় কাউন্সিলর একরামুল হক উল্লেখ করেন তার বাৎসরিক আয় গড়ে ১০ লাখ টাকা। সে হিসেবে মাসিক আয় দাঁড়ায় ৮৩ হাজার টাকার মতো।
কক্সবাজার জেলা নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে পৌর নির্বাচনী হলফনামায় কাউন্সিলর একরামুল হক নিজের বাৎসরিক আয় ১০ লাখ টাকা দেখিয়েছেন। নিজের পেশা হিসেবে দেখান ব্যবসা।
হলফনামায় অস্থাবর সম্পদ হিসেবে দেখান, একটি মোটরসাইকেল, একটি টিভি, একটি ফ্রিজ, একটি খাট, একটি আলমিরা ও দুটি ফ্যান। তবে হলফনামায় একরামুল হক নিজের কোনো স্থাবর সম্পদ নেই বলে জানিয়েছেন।
আরও : আর্জেন্টিনার ভক্ত মাশরাফি
হলফনামায় একরামুল হক উল্লেখ করেন, ২০০৫ সালে টেকনাফ থানায় তার বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলা করা হয় যা কক্সবাজার প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নিষ্পত্তি হয়।
এছাড়া টেকনাফ আয়কর অফিস সূত্রে জানা গেছে, একরামুল হক তাহিয়াদ এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছেন। ২০১১ সালে টেকনাফ পৌরসভা থেকে ইস্যু করা ওই ট্রেড লাইসেন্স একটি ফটোকপির দোকানের নামে নিবন্ধিত।
ট্রেড লাইসেন্সে ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা দেয়া হয়েছে একরামের বাড়ির ঠিকানায় (তাহিয়াদ এন্টারপ্রাইজ, প্রো. একরামুল হক, কেকে পাড়া, ৩নং ওয়ার্ড। কম্পিউটার অ্যান্ড ফটোস্ট্যাট, টেকনাফ)।
টেকনাফ বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর করিম জানিয়েছেন, কাউন্সিলর একরামুল বণিক সমিতির সভাপতি ছিলেন। একরামুল খুব সৎ জীবন যাপন করতেন। তিনি ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।
টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রঞ্জিত বড়ুয়া জানান, টেকনাফে কেকে পাড়ার দুইতলা বাড়িতে কাউন্সিলর একরামুলরা চার ভাই যৌথ বসবাস করেন। এছাড়া একরামুলের নির্মাণাধীন একটি বাড়ি রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মে রাতে টেকনাফে র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন কাউন্সিলর ও উপজেলার যুবলীগের সাবেক সভাপতি একরামুল হক।