দুই বছরে ‘সড়ক দুর্ঘটনার হতাহত’ অর্ধেকে নামানোর টার্গেট
ডেস্ক রিপোর্ট : ২০২০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ও নিহতদের সংখ্যা বর্তমানের অর্ধেকে নামিয়ে আনতে চায় সরকার। এ কথা জানিয়ে আবদুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘এ লক্ষ্যে থ্রি-ই (ইঞ্জিনিয়ারিং, এডুকেশন অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট) বিবেচনায় রেখে বিভিন্ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
সড়ক নিরাপত্তা বৃদ্ধি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে এক লাখ দক্ষ গাড়িচালক তৈরি করার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে বলেও জানান অর্থমন্ত্রী।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় তিনি এ কথা জানান। বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে তিনি এই বাজেট পেশ করেন। এবার উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন মিলে জাতীয় বাজেটের আকার ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা।
সড়ককে ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে ২০২১ সালের মধ্যে মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ ২৮ স্থানে সরকার ওজন স্কেল (এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন) স্থাপন করবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে ৫৩ হাজার ৮১ কোটি বরাদ্দের প্রস্তাব করেন মুহিত।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের গুরুত্বপূর্ণ এক হাজার ১৪০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়ককে যথাযথ মানসম্পন্ন ও প্রশস্ত করার জন্য আমরা ১০টি সড়ক জোনভিত্তিক ১০টি গুচ্ছ প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এর আওতায় পর্যায়ক্রমে সারাদেশের ৩ হাজার ৮১৩ কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ককে চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত করা হবে। ইতোমধ্যে ৪৬৫ কিলোমিটার সড়ক চার বা তদূর্ধ্ব লেনে উন্নীত হয়েছে। আরও ৪৩৬ কিলোমিটার সড়ককে উন্নীতকরণের কাজ চলছে।’
আরও : আর্জেন্টিনার ভক্ত মাশরাফি
‘দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলের মধ্যে সরাসরি চলাচলের সুযোগ তৈরির জন্য আমরা ঢাকা ইস্টওয়েস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা নিয়েছি। এটি এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘সড়ক নির্মাণের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ততা রোধ করার ওপর আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাই। সে লক্ষ্যে ২০২১ সালের মধ্যে দেশের মহাসড়ক নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ ২৮টি স্থানে এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপন করা হবে।’
দেশের পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগ নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করতে ৬১টি সেতু নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ অর্ধেকের বেশি শেষ হয়েছে। এ ছাড়া নবম (বগা সেতু), দশম (মোংলা সেতু) ও একাদশ (ঝপঝপিয়া) বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু নির্মাণের জন্য চীন সরকারের সঙ্গে সমাঝোতাস্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। তদুপরি, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি ২০২২ সাল নাগাদ এর কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।’
ঢাকা মহানগরীর অভ্যন্তরীণ সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, প্রবেশ ও নির্গমন মহাসড়কের যানজট নিরসন এবং ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জন্য পরিকল্পিত ও সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০০৫ সালে ২০ বছর মেয়াদি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে এটিকে হালনাগাদ করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সংশোধিত পরিকল্পনায় ৫টি ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি), দুটি বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি), তিন স্তরবিশিষ্ট রিং রোড, ৮টি রেডিয়াল সড়ক, ৬টি এক্সপ্রেসওয়ে, ২১টি ট্রান্সপোর্টেশান হাব নির্মাণ এবং ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট-ট্রাফিক সেফটি ব্যবস্থার উন্নয়ন ও বাস পরিবহন সেক্টর পুনর্গঠনের সংস্থান রয়েছে।’
উত্তরা তৃতীয় ফেজ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত নির্মাণাধীন বাংলাদেশের প্রথম মেট্রোরেলের নির্মাণ কাজ ২০২০ সালের মধ্যে শেষ করার আশাবাদ ব্যক্ত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ ছাড়া আগামী অর্থবছরে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু করবো। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি যে, বৃহত্তর ঢাকার জন্য নিউইয়র্কের আদলে একটি মেট্রো যোগাযোগ কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠাপূর্বক সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সমন্বিত করে একটি একক পরিচালনা সংগঠন স্থাপন করা যথাযথ হবে।’