ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে ইফতার বাতিল
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে দীর্ঘদিন ধরেই রমজান মাসে ইফতারের রীতি চলে আসছে। তবে এ বছর থেকে আর ইফতারের আয়োজন করা হবে না বলে রাষ্ট্রপতি ভবন জানিয়েছে। খবর বিবিসির।
রাষ্ট্রপতির এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শুধু ইফতার নয়, কোনও ধর্মীয় অনুষ্ঠানই আর রাষ্ট্রপতি ভবনে পালিত হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেদেশের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব অশোক মালিক সংবাদসংস্থা পিটিআইকে বলেন, ‘রামনাথ কোভিন্দ দায়িত্ব নেয়ার পরে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে রাষ্ট্রপতি ভবনের মতো সরকারি ভবনগুলোতে কোনও ধরনের ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন করা চলবে না। এ ধরনের সব অনুষ্ঠানই যেহেতু করদাতাদের দেয়া অর্থে করা হয়, তাই ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ অনুসরণ করে কোনোরকম ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।’
তবে প্রতিটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান বা জয়ন্তীতে দেশবাসীকে নিয়মমাফিক শুভেচ্ছা বার্তা দেয়া বন্ধ করেননি রাষ্ট্রপতি।
রোজার সময়ে ইফতার বহুদিন ধরেই আয়োজিত হয়ে আসছে রাষ্ট্রপতি ভবনে।
এর আগে এ পি জে আব্দুল কালাম যখন রাষ্ট্রপতি ছিলেন, সেই পাঁচ বছরও অবশ্য রাষ্ট্রপতি ভবনে ইফতার আয়োজিত হয়নি।
তবে তার পরে দায়িত্ব নেয়া প্রতিভা পাতিল বা কোবিন্দের আগে রাষ্ট্রপতি পদে আসীন থাকা প্রণব মুখার্জী প্রতি বছরই ইফতারের আয়োজন করতেন।
আরও : আর্জেন্টিনার ভক্ত মাশরাফি
রাষ্ট্রপতি পদে রামনাথ কোবিন্দকে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দিয়েছিল বিজেপি’র নেতৃত্বাধীন ক্ষমতাসীন এনডিএ জোট।
এর আগে তিনি বিহারের রাজ্যপাল ছিলেন, তবে তার মূল পরিচিতি ছিল বিজেপি’র দলিত মোর্চার শীর্ষ নেতা হিসেবে। দুবার বিজেপি তাকে সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় সদস্য করে পাঠিয়েছিল।
রাষ্ট্রপতি ভবনে যেমন এ বছর থেকে ইফতার বন্ধ করে দিয়েছেন কোবিন্দ, তেমনই হিন্দু পুনরুত্থানবাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা আরএসএস-এর নাগপুর সদর দপ্তরে ইফতার আয়োজনের প্রস্তাবও নাকচ হয়ে গেছে।
সংঘের মহারাষ্ট্র শাখার প্রধান ওই ইফতারের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সংঘের মুসলিম শাখার প্রধান মুহাম্মদ আফজল জানিয়েছিলেন যে অমুসলিমরা ইফতারের আয়োজন করতে পারে, এমন কথা ইসলাম ধর্মে লেখা নেই।
অন্যদিকে বাবরি মসজিদ-রাম জন্মভূমি নিয়ে বিতর্কের কেন্দ্রস্থল উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় কদিন আগে হিন্দু সাধু সন্তরা রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য আয়োজন করেছিলেন ইফতারের।
সেখান থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জানিয়েছেন অযোধ্যার সরযূ কুঞ্জ মন্দিরেই ইফতারে আয়োজন করেছিলেন মহন্ত যুগল কিশোর শরণ শাস্ত্রী।
‘মন্দিরের সাধু সন্তরা মুসলমান ভাইদের নিজের হাতে খাইয়েছেন ইফতারে। মন্দিরে আমাদের ঈশ্বরকে যা প্রসাদ দেয়া হয়, সেটাই দেয়া হয়েছে মুসলমান ভাইদেরও’- বিবিসিকে জানিয়েছেন শাস্ত্রী।