মুক্তিযোদ্ধারা বিনাখরচে চিকিৎসা পাবেন এবং উৎসব ভাতাও
অনলাইন ডেস্ক : মুক্তিযোদ্ধারা বিনাখরচে চিকিৎসা পাচ্ছেন। পাবেন উৎসবও। জাতীয় সংসদে বৃহস্পতিবার (০৭জুন) আগামী ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তব্যে এ তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নের জন্য দেশের সকল জেলা/উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। এ পর্যন্ত ৫৭টি জেলায় ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। আমরা দেশের সকল সরকারি হাসপাতালে ও ১৬টি বিশেষায়িত হাসপাতালে মুক্তিযোদ্ধাদের বিনা খরচে চিকিৎসাসেবা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছি।
তিনি জানান, ‘ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের বাসস্থান নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় ২ হাজার ৮৫২টি ইউনিট নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছে; আরও ১১৯টি ইউনিট নির্মাণাধীন আছে। এছাড়াও ৮ হাজার অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকে আবাসন সুবিধা প্রদানের জন্য জেলা/উপজেলা পর্যায়ে বহুতল ভবন নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী আরও জানান, মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে সকল বে-সামরিক, সামরিক, শহীদ, খেতাবপ্রাপ্ত ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে ‘বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট আইন, ২০১৮’ এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়েছে, যা বর্তমানে জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছে। আগামী অর্থবছর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিজয় দিবস ভাতা চালু করা হচ্ছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের সূর্যসন্তানদের জন্য বিশেষ সম্মাননা ভাতা বাবদ ‘বিজয় দিবস ভাতা’ নামে প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধা বছরে এককালীন ৫ হাজার টাকা পাবেন। ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধাদের এই সম্মানী ভাতা দ্রুত তাদের হাতে পৌঁছানো হবে।
আরও : আর্জেন্টিনার ভক্ত মাশরাফি
উল্লেখ্য, সরকার সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য নতুন করে তিনটি ভাতা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর একটি ‘নববর্ষ ভাতা’ ইতোমধ্যেই চালু করা হয়েছে। এই বাজেটে চালু হচ্ছে ‘বিজয় দিবস’ ভাতা। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে সব সরকারি হাসপাতাল ও ১৬টি বিশেষায়িত হাসপাতালে বিনা খরচে চিকিৎসা নেওয়া, সম্মানী ভাতা দ্রুত পৌঁছানোর জন্য ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি ব্যবহার ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সুবিধা দিতে বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগের প্রতিশ্রুতিও রয়েছে অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতায়।
২০১৭-১৮ অর্থবছরের বাজেটে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বরাদ্দ দেওয়া রয়েছে ৩ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে ৪ হাজার ২৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
এক বছরের ব্যবধানে এ খাতে সরকারের বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ছে ২৭৫ কোটি টাকা। বর্তমানে দেশে বিদ্যমান ২ লাখ মুক্তিযোদ্ধা প্রতিবছর বিজয় দিবস ভাতা বাবদ এককালীন ৫ হাজার টাকা পাবেন।
জানা গেছে, নতুন বাজেটে বিজয় দিবস ভাতা দিতে সরকারের বাড়তি অর্থের প্রয়োজন হবে ১০০ কোটি টাকা। প্রত্যেক মুক্তিযোদ্ধা ২ হাজার টাকা করে নববর্ষ ভাতা হিসেবে এ বছরই প্রথম পাচ্ছেন। এর জন্য সরকারকে বরাদ্দ রাখতে হচ্ছে ৪০ কোটি টাকা। আর দুই ঈদে দু’টি বোনাস খাতে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৪০০ কোটি টাকা।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, সব ধরনের ভাতাসহ উন্নয়ন ও অনুন্নয়ন ব্যয় মেটাতে আগামী বাজেটে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়কে ৪ হাজার ২৬১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। চলতি বাজেটে এ মন্ত্রণালয়ের অনুকূলে বরাদ্দের পরিমাণ হচ্ছে ৩ হাজার ৯৮৬ কোটি টাকা। আর্থিক দিক বিশ্লেষণ করলে নতুন বাজেটে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ বাড়ছে পৌনে ৩শ’কোটি টাকা।