শপথ নিয়ে ফের মালয়েশিয়ার হাল ধরলেন মাহাথির
অবশেষে নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে মালয়েশিয়ার সপ্তম ও বিশ্বের সবচেয়ে বয়োবৃদ্ধ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করলেন কিংবদন্তী মাহাথির বিন মোহাম্মদ। বাংলাদেশ সময় রাত ৮ টায় রাজা পঞ্চম মোহাম্মদের আমন্ত্রণে কুয়ালামপুরের ইস্তানা নাগারা প্রাসাদে মাহাথির শপথ নেন।
বুধবারের সাধারণ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধী নাজিব রাজাককে পরাজিত করে আবারও দেশটির হাল ধরলেন মাহাথির। এই নির্বাচনে ছয় দশক ধরে দেশটির ক্ষমতায় থাকা বারাসান ন্যাশনাল পার্টির বিরুদ্ধে ভোটবাক্সে সুনামি বইয়ে দিয়েছে মালয়েশিয়রা। নির্বাচনে মাহাথিরের পাকাতান হারাপান পেয়েছে ১২১টি আসন, আর ক্ষমতাসীনেরা পেয়েছে ৭৯টি এবং তৃতীয় জোট পাকিতান রাকিয়াত পেয়েছে ১৮টি।
এদিকে মাহাথির শপথ গ্রহণের পর ইস্তানা নাগারার বাহিরে উল্লাস করেছে দেশটির নাগরিকরা। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি হেসিয়েং লোং সঙ্গে সঙ্গে মাহাথিরকে অভিনন্দন জানান।
এরআগে দেশটির রাজপ্রাসাদ ইস্তানা নাগারার বিরুদ্ধে শপথ গ্রহণে বিলম্বের অভিযোগ ওঠে। ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হ্ওয়ায় নির্ধারিত সময়ের প্রায় পাঁচ ঘন্টা পর মাহাথিরের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে রাজপ্রাসাদের কন্ট্রোলার এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেন।
রাজপ্রাসাদ থেকে বলা হয়েছিল, পাকাতান হারাপান জোট সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বারিসান জোটকে হারালেও বৃহস্পতিবার নতুন প্রধানমন্ত্রী শপথ নিতে পারবেন না। বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হলে মাহাথির জানান, সংবিধান বুঝতে জটিলতার কারণেই শপথ গ্রহণের বিষয়টি পেছানো হয়েছে। প্রথম জটিলতাটি দেখা দিয়েছে বিজয়ী জোট নিয়ে। পাকাতান হারাপানের দল চারটি আনুষ্ঠানিকভাবে জোট গঠন করে নির্বাচন করেনি। করেছে পিপল’স জাস্টিস পার্টি (পিকেআর)-এর প্রতীক নিয়ে। আর এ কারণে চারটি দলের কোনোটিরই এককভাবে সরকার গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই । তবে তিনি আরো জানান, আমরা আইনের নির্দেশ মেনে চলব।
দেশটির জ্যেষ্ঠ আইনজীবী দাতুক রজার বলেন, ‘সংবিধানের আর্টিকেল ৪৩(২) ধারা মোতাবেক, প্রধানমন্ত্রী পদের যোগ্যতা হিসেবে পার্লামেন্টে সদস্যদের সমর্থনের কথা বলা হয়েছে, কোন দল জোট বা সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের নয়। সেদিক থেকে মাহাথিরের ১৩৫ জন এমপির সমর্থন রয়েছে।’
মালয়েশিয়ার সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতকরণ বেসরকারী সংস্থা ‘বারসিহ’ জানায়, নতুন প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতা হস্তান্তরে বিলম্ব করার কোন যৌক্তিক কারণ নেই। বারসিহ এর সভাপতি শাহরুল আলম নাজিব রাজাককে পরাজয় মেনে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের অনুমোদন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলে, নেতাবিহীন দেশে যে কোন মুহুর্তে ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
মালয়েশিয় পুলিশের আইজিপি মোহাম্মদ ফুজি হারুন বলেন, ‘আমি আর্মড ফোর্সের প্রধান জেনারেল রেজা মোহাম্মদ এবং চিফ সেক্রেটারি আলি হামাসার সঙ্গে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে বৈঠক করেছি। আমরা একমত হয়েছে, কোন রকম তাল-বাহানা এড়িয়ে এটি খুব দ্রুত সম্পন্ন হওয়া উচিত। আমরা জনগণকে আশ্বস্ত করছি যে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করব।’ দ্য স্টার অনলাইন।