রোজায় সুস্থ থাকুন
স্বাস্থ্য ডেস্ক : আর কয়েক দিন পর রোজা শুরু। সারা বছরের খাদ্যাভ্যাস বদলে যাবে এই এক মাসে। প্রথম দিকে মানিয়ে নিতেও হবে বেশ অসুবিধা। কিন্তু কিছুটা নিয়ম মেনে চললেই ডায়াবেটিস, অ্যাসিডিটি, কিডনিজনিত নানা সমস্যার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া যাবে সহজেই।
রোজার ডায়েট সম্পর্কে ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের বিভাগীয় প্রধান ও প্রধান পুষ্টি কর্মকর্তা শামসুন্নাহার নাহিদ জানালেন, রোজায় অনেকে সাহ্রিতে খান না বা ইফতারের পর রাতে না খেয়ে শুয়ে পড়েন। আসলে রোজায় কিন্তু কোনোভাবেই সাহ্রি খাওয়া বাদ দেওয়া যাবে না; বরং সাহ্রিতে খেতে হবে সব থেকে বেশি খাবার। সাধারণত আমরা দুপুরে বেশি খাই। সাহ্রিতে খেতে হবে সেই পরিমাণ। আর ইফতারে খেতে হবে সাহ্রির থেকে কম কিন্তু রাতের খাবারের থেকে বেশি পরিমাণ খাবার।
ইফতারে যেকোনো এক ধরনের শরবত কিন্তু থাকতেই হবে। সেই সঙ্গে কারও ডায়াবেটিস বা এ ধরনের সমস্যা নেই এমন প্রত্যেক মানুষের কিন্তু যেকোনো ধরনের মিষ্টি খাওয়া দরকার। সঙ্গে চিড়া, মুড়ি, খিচুড়ি বা এজাতীয় অন্য কোনো শর্করাজাতীয় খাবারও খেতে হবে। রোজায় সারা দিন না খেয়ে থাকার ফলে শরীরে যেসব ঘাটতি তৈরি হয়, সেসব পূরণে যেকোনো একটি প্রোটিন খাওয়া জরুরি। সে ক্ষেত্রে ছোলা, চিকেন, হালিম, কাবাব বা ডিমের তৈরি খাবার খেতে হবে। আর যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, তাঁরা শরবত খাবেন চিনি ছাড়া। আর কিডনি রোগে আক্রান্ত সবাইকে কিন্তু ছোলা, বেসন—এসব বাদ দিতে হবে। বেসন ছাড়া বানানো আলুর চপ, শাকসবজি দিয়ে বানানো পাকোড়া—এসব খাওয়া ভালো বলেও জানান শামসুন্নাহার নাহিদ।
রোজায় সুস্থ থাকতে কোনোভাবেই বাইরের ভাজা–পোড়া খাবার খাওয়া যাবে না। সাহ্রি বা ইফতারে যেকোনো ধরনের খাবার খেতে হবে ঘরে বানানো। বাইরে বাসি বা পোড়া তেলের পাশাপাশি একই ধরনের তেলে ঝাল আর মিষ্টি খাবার ভাজার জন্য অ্যাসিডিটি বাড়বে। রোজায় প্রচুর পানি পানের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুমও খুব জরুরি। এর সঙ্গে খেতে হবে সহজপাচ্য খাবার। জুস কিনে আনার চেয়ে দেশি ফল দিয়ে নিজেই ঘরে তৈরি করে নিতে পারেন। পাশাপাশি বাজারের হালিম বা জিলাপির বিকল্প হতে পারে ঘরে তৈরি হালিম আর বাসায় তৈরি পায়েস বা মিষ্টি। খেয়াল রাখতে হবে রোজায় কোনোভাবেই ইফতারি, রাতের খাবার আর সাহ্রি—কোনোটাই বাদ দেওয়া যাবে না। রোজায় সুস্থ থাকতে খুব বেশি কষ্ট নয়, মানতে হবে নিয়ম।