পা জ্বালাপোড়া করলে যা করবেন
স্বাস্থ্য ডেস্ক : বার্নিং ফুট সিনড্রোম হলো পা জ্বালাপোড়া ও অতিরিক্ত ভার এ ধরনের এক অনুভূতি। আমাদের মধ্যে অনেকেই এ সমস্যায় ভুগছেন। তবে ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সে এবং ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হয়। পুরুষের তুলনায় নারীরা এ রোগে বেশি ভোগে। পায়ের তলা ছাড়াও গোড়ালি, পায়ের উপরিভাগে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা হতে পারে। অনেক সময় পায়ের রঙ পরিবর্তন হয়, অতিরিক্ত ঘাম হয় এবং পা ফুলে যায়। চাপ প্রয়োগ করলে কোনো ব্যথা অনুভূত হয় না। মাঝে মধ্যে অস্বাভাবিক অনুভূতি ও অবশভাব হয়। জ্বালা ও ব্যথা রাতে বেড়ে যায় এবং প্রায়ই ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর এ ধরনের উপসর্গ থাকে না।
পা জ্বালাপোড়া করার কারণ : ১. ভিটামিন বি-এর উপাদান যেমন- থায়ামিন (বি-১), পাইরোডোক্রিন (বি-৬), সায়ানোকোবালামিন (বি-১২), নিকোটানিক এসিড ও রাউবোফ্ল্যাভিনের অভাবে পা জ্বালা এবং ব্যথা করে। ২. পরিবর্তিত বিপাকীয় ও হরমোনের সমস্যা (ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরোডিসম)। ৩. কিডনি ফেইলুর (হিমোডায়ালাইসিস রোগী)। ৪. যকৃৎ (লিভার) ফাংশন খারাপ। ৫. কেমোথেরাপি। ৬. দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত মদপান। ৭. ইলফিটিং বা ডিফেক্টিভ জুতা পরিধান। ৮. অ্যালার্জিজনিত কাপড় ও মোজা ব্যবহার করা। ৯. বংশানুক্রমিক অসঙ্গত স্নায়ু পদ্ধতি। ১০. স্নায়ু ইনজুরি, অবরুদ্ধ (ইনট্রাপমেন্ট) ও সংকোচন (কমপ্রেশন)। ১১. মানসিক পীড়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিও এ ধরনের পরিস্থিতির শিকার হন।
করণীয় : চিকিৎসার শুরুতেই রোগের ইতিহাস, রোগীর শারীরিক ও ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় রোগীকে আশ্বস্ত করতে হবে যে, প্রতিকার ও চিকিৎসার মাধ্যমে এ রোগ থেকে মুক্ত হওয়া যায়। সুপরিমাপের খোলা ও আরামদায়ক জুতা পরিধান করতে হবে। আরামদায়ক সুতার মোজা ব্যবহার করা উত্তম। পায়ের আর্চ সাপোর্ট, ইনসোল ও হিল প্যাড ব্যবহারে উপসর্গ লাঘব হবে। পায়ের পেশির ব্যায়াম ও ঠাণ্ডা পানির (বরফ না) সেঁক উপসর্গ নিরাময়ে অনেক উপকারী। রোগ প্রতিরোধে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সেবন করতে হবে এবং চিকিৎসায় ভিটামিন ইনজেকশন পুশ করতে হবে। মদপান ও ধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রিত রাখতে হবে। স্নায়ু ইনজুরি, অবরুদ্ধ ও সংকোচন হলে যথোপযুক্ত চিকিৎসা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয়। বার্নিং ফুট সিনড্রোম থেকে সুস্থ থাকতে হলে সবাইকে চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধে সচেষ্ট থাকতে হবে।