চালের দাম কমেছে, বেড়েছে ব্রয়লার মুরগির
নিজস্ব প্রতিবেদক : আগামী সপ্তাহে রাজধানীর বাজারে আসতে পারে নতুন ধানের চাল। আগেভাগে পুরনো চাল বিক্রি শেষ করতে মিল মালিকরা দাম কমিয়ে বাজারে ছাড়ছেন। এতে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দাম বেশ কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে কেজিতে ২ থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে। সবচেয়ে বেশি হারে কমেছে মোটা চালের দাম। একই সময়ে সরকারের গুদামে চালের মজুদ বেশ ভালো। এতে চালের বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়ায় সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মোটা ও মাঝারি চালের দাম কেজিতে ৫ টাকা কমেছে। সরু চালের দাম কেজিতে দুই টাকা কমেছে। এতে মোটা চাল স্বর্ণা ও গুটি ৩৯ থেকে ৪১, মাঝারি চাল বিআর ২৮ ও লতা ৪৪ থেকে ৪৭ ও সরু চাল মিনিকেট মানভেদে ৬০ থেকে ৬২ টাকা ও নাজিরশাইল ৬০ থেকে ৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা আগের সপ্তাহে খুচরায় প্রতি কেজি মোটা চাল ৪৪ থেকে ৪৫ ও মাঝারি মানের বিআর ২৮ চাল ৫০ থেকে ৫২ এবং সরু চাল মিনিকেট ৬২ থেকে ৬৫ ও নাজিরশাইল ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা ছিল। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যেও চালের দাম একই রকম দেখা গেছে। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে আলুর দাম কেজিতে আরও ২ টাকা বেড়ে ১৮ থেকে ২২ টাকা হয়েছে। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগি ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। সবজির দামও কিছুটা বেড়েছে। এ ছাড়া অন্যান্য পণ্যের দামে তেমন পরিবর্তন হয়নি।
কারওয়ান বাজারের ইসমাইল অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী মো. মইন উদ্দীন মানিক সমকালকে বলেন, এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম কমেছে। বোরো মৌসুমের ধান উঠছে। আগামী সপ্তাহে নতুন চাল বাজারে আসবে। এ কারণে দাম কমতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, এবার সরকার ৩৮ টাকা কেজিতে চাল কিনবেন। এ দামের কাছাকাছি দরে বাজারে চাল বিক্রি হবে বলে আশা করেন তিনি।
গত বছর বোরো মৌসুমে হাওরে অকাল বন্যা এবং উত্তরাঞ্চলে বন্যার পর চালের দাম একটানা বাড়তে থাকে। চালের দাম কমানোর জন্য আমদানি শুল্ক্ক কমানোসহ নানামুখী পদক্ষেপ নেয় সরকার। এরপর চালের দাম কিছুটা কমেছে। মিল মালিকরা জানান, এবার মৌসুমের নতুন ধান ওঠায় আগের মজুদ চাল এখন সবাই বিক্রি শেষ করতে চান। এ কারণে বাজারে চালের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দাম কমছে। সপ্তাহের ব্যবধানে মিলে মোটা ও মাঝারি চালের দাম কেজিতে ৫ টাকা কমেছে। এবার চালের দাম আরও কমতে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জানা যায়, বন্যার পরে গত মৌসুমে মিল মালিকরা সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ না করায় মজুদ কমে যায়। এতে বাজার অস্থির হয়ে ওঠে। এবার সরকার আগেভাগে চালের মজুদ বাড়িয়েছে। পাশাপাশি বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি অব্যাহত আছে। তবে এবার ফলন ভালো হওয়ায় আমদানির প্রয়োজন হবে না বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে সরকারি গুদামে ৮ লাখ ২১ হাজার টন চাল ও ৩ লাখ ২৯ হাজার টন গম মজুদ রয়েছে। চলতি অর্থবছরের ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে ৩৬ লাখ ৭৮ হাজার টন চাল আমদানি হয়েছে। শুধু বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি হয়েছে ১০ লাখ টনের বেশি। যদিও গত মৌসুমে বোরো উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার পরে ৯ লাখ টন উৎপাদন ঘাটতির কথা বলা হয়েছিল। এর তিনগুণের বেশি আমদানি হয়েছে।