কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে দুই কোরিয়া সম্মত
অনলাইন ডেস্ক : কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করতে একমত হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। আজ শুক্রবার ঐতিহাসিক সম্মেলন শেষে দুই কোরিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানেরা এ ঘোষণা দেন। এ ছাড়া ১৯৫৩ সালের কোরীয় যুদ্ধের পর থেকে জারি থাকা যুদ্ধবিরতিকে একটি শান্তিচুক্তিতে রূপান্তরিত করার বিষয়েও মতৈক্যে পৌঁছেছেন তাঁরা।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, কোরীয় উপদ্বীপকে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন এবং দক্ষিণ কোরিয়ার মুন জে-ইন। সীমান্তে এক বৈঠকের এমন ঘোষণা আসে। চলতি বছরের মধ্যেই দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে জারি থাকা যুদ্ধবিরতিকে একটি শান্তিচুক্তিতে রূপ দেওয়ার কথাও বলেছেন তাঁরা।
অথচ কয়েক মাস আগেই দুই কোরিয়ার মধ্যে যুদ্ধাবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। তবে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের কাজ দুটি দেশ কীভাবে এগিয়ে নেবে, সে সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়টি আদৌ আর এগোবে কি না এবং উত্তর কোরিয়া তাতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেবে কি না, সে বিষয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন কিছু বিশ্লেষক।
শুক্রবার সকালে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন সামরিক সীমান্ত পেরিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবেশ করেন। সীমান্তে কিমকে স্বাগত জানিয়ে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। কোরীয় যুদ্ধ-পরবর্তী ৬৫ বছরে এই প্রথম উত্তরের কোনো নেতা দক্ষিণে পা রাখেন। দুই দেশের সীমান্তবর্তী গ্রাম পানমুনজমের পিস হাউসে তিনি বৈঠক করেন দক্ষিণ কোরিয়ার নেতা মুন জে-ইনের সঙ্গে। বৈঠকের আগে দুই নেতা হাসিমুখে পরস্পরের সঙ্গে হাত মেলান।
বৈঠকের পর এক বক্তৃতায় কিম জং-উন বলেন, এ অঞ্চলের ‘দুর্ভাগ্যজনক ইতিহাসের’ পুনরাবৃত্তি যেন না হয়, সে জন্য দুই দেশের নেতাদের ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, এর মধ্যে অনেক প্রতিবন্ধকতা ও হতাশা থাকতে পারে। কিন্তু যন্ত্রণা ছাড়া বিজয় অর্জন করা যায় না।
দুই দেশের দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, দুই কোরিয়ার মধ্যকার ‘সহিংস কর্মকাণ্ড’ বন্ধ করতে একমত হয়েছেন শীর্ষ নেতারা। আঞ্চলিক সামরিক উত্তেজনা কমাতে অস্ত্রের মজুত কমিয়ে আনা হবে। যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে সঙ্গে নিয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা চালানো হবে। কোরীয় যুদ্ধের কারণে বিভক্ত পরিবারগুলোর সদস্যদের পুনর্মিলনীর আয়োজন করা হবে। এ ছাড়া সীমান্তসংলগ্ন এলাকাকে ‘পিস জোন’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই কোরিয়া।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনকে উত্তর কোরিয়ায় সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন কিম জং-উন। বিকেলের অধিবেশনে দুই নেতা সীমান্তে বৃক্ষরোপণ করেন। মোট নয় সদস্যের প্রতিনিধিদল নিয়ে শুক্রবার দক্ষিণ কোরিয়া যান কিম জং-উন। এই দলের সদস্য ছিলেন তাঁর বোন কিম ইয়ো-জং।