আইপিএলে সাকিব এবার দুর্দান্ত, কেন?
স্পোর্ট ডেস্ক : মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে ফিরিয়ে কাল সাকিব আল হাসান যে উদ্যাপনটা করলেন, এমন তাঁকে কমই করতে দেখা যায়। মুষ্টিবদ্ধ হাতে আগ্রাসী চেহারায় যেন হুংকার ছুড়লেন, মাথা থেকে ঝরে পড়া ঘাম বিন্দুগুলো যেন অগ্নিবৃষ্টি! এবার সাকিব ফিরিয়ে আনছেন ২০১৪ আইপিএলের স্মৃতি। আট বছরের আইপিএল অভিজ্ঞতায় সাকিবের সবচেয়ে দুর্দান্ত কেটেছে ২০১৪ সালেই। ১৩ ম্যাচে ২২৭ রান ও ১১ উইকেট নিয়ে সেবার কলকাতার শিরোপা জয়ে রাখেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। ঘর পাল্টে এবার হায়দরাবাদের হয়ে উজ্জ্বল সাকিবের দেখাই মিলছে। ২০১৪ সালের পর টানা তিন আইপিএল ভালো না গেলেও এবার কীভাবে ধারাবাহিক দ্যুতি ছড়াচ্ছেন সাকিব, সেটি দেখে নিতে পারেন।
১. গতবারের তিক্ত অভিজ্ঞতা
কলকাতার হয়ে গত আইপিএলে মাত্র একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পান সাকিব। ৩ ওভারে ৩১ আর ব্যাট হাতে অপরাজিত ১ রানেই শেষ ২০১৭ আইপিএল অধ্যায়। ম্যাচের পর ম্যাচ সাকিবকে সাইডবেঞ্চে বসিয়ে রাখা হয়েছে, তাঁকে আর সুযোগই দেওয়া হয়নি। পরে তো কলকাতা তাঁকে ছেড়েই দিয়েছে। গত আইপিএলের তিক্ত অভিজ্ঞতাই সাকিবকে হয়তো নতুনভাবে নিজেকে চেনাতে উৎসাহিত করেছে। যে কলকাতা তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে, তাঁদের বিপক্ষে ইডেনে এবার কী দুর্দান্ত খেলাটাই না খেললেন বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক।
২. টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থা
হায়দরাবাদের যে সাতজন খেলোয়াড় এখনো পর্যন্ত নিজেদের প্রতিটি ম্যাচই খেলার সুযোগ পেয়েছেন, সাকিব তাঁর মধ্যে অন্যতম। এই ৭ ম্যাচে রান ১১৭, উইকেট ৮টি—ধারাবাহিক ভালো খেলছেন বলেই টিম ম্যানেজমেন্ট প্রতি ম্যাচেই তাঁর ওপর আস্থা রাখছে। প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের চেপে ধরার দায়িত্বটা রশিদ খানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে সামলাচ্ছেন সাকিব। টিম ম্যানেজমেন্টের অন্যতম সদস্য লঙ্কান কিংবদন্তি মুত্তিয়া মুরালিধরনের দারুণ সমর্থন পাচ্ছেন সাকিব। সুযোগ পেলেই সাকিবকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন মুরালি। শুধু মুরালি কেন, দলের প্রধান কোচ টম মুডিও সমর্থন করছেন সাকিবকে। তাঁর সঙ্গে আগে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকায় কাজটা সহজ হয়ে যাচ্ছে বাঁহাতি অলরাউন্ডারের।
৩. অধিনায়কের আস্থা
সাকিবের কাছ থেকে একই সঙ্গে তিনটি সেবা পাচ্ছেন হায়দরাবাদ অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। মিডল অর্ডারে তাঁর সঙ্গে সাকিব জুটি বাঁধার চেষ্টা করছেন, দুর্দান্ত বোলিংয়ের সঙ্গে অসাধারণ ফিল্ডিং—উইলিয়ামসনের কাছে সাকিব যেন একের ভেতর তিন! হায়দরাবাদের কিউই অধিনায়কের কাছে তাই বড় ভরসা হয়ে উঠেছেন বাংলাদেশ অলরাউন্ডার। দলের থিঙ্ক ট্যাংকের অন্যতম অংশও এখন সাকিব। কলকাতায় যে ভূমিকাটা রাখতে পারেননি, হায়দরাবাদের হয়ে মাঠে সেটি রাখতে পারছেন তিনি।
৪. সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতা
এবার আইপিএলে হায়দরাবাদের বোলিং আক্রমণকে অন্যতম শক্তিশালী বলা হচ্ছে সাকিব-রশিদের জুটিটা জমে ওঠার কারণেই। এক প্রান্ত থেকে সাকিব, অন্য প্রান্তে রশিদ—হায়দরাবাদের স্পিন বিভাগ ভীষণ শক্তিশালী। দুই তারকার কেউ নিশ্চয়ই চাইছেন না, এই সমন্বয়টা ভেঙে যাক। দুই স্পিনারকে সমর্থন করছেন পেসার সিদ্ধার্থ কৌল। হায়দরাবাদ যে টানা দুটি ম্যাচ লো স্কোর করেও জিতেছে, এই তিন বোলারের কারণে। নিজেদের মধ্যে এই সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বিতা ধারাবাহিক ভালো খেলায় অনুপ্রাণিত করছে সাকিবকে।