চট্টগ্রামে ডিশ ব্যবসা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিতে নিহত যুবলীগ কর্মী
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রামে ডিশ ব্যবসার দখল নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যে গুলিতে ঘটনাস্থলেই নিহত হয়েছেন এক যুবলীগ কর্মী। ওই কর্মীর নাম ফরিদুল ইসলাম (৪০)। এ ঘটনায় আশপাশে থাকা শিশুসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়।
আজ শুক্রবার বিকেলে নগরের চকবাজার থানার ডিসি রোডের মিয়া বাপের মসজিদ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ফরিদ বালুর ব্যবসা করতেন। পাশাপাশি কাশেম ক্যাবল টিভি নেটওয়ার্ক (কেসিটিএল) নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে লাইন নিয়ে ওই এলাকায় দুই হাজারটি ডিশ–সংযোগ দিয়েছেন।
আজ বিকেলে নিহত ব্যক্তির লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে সেখানে ভিড় জমান তাঁর স্বজনেরা। নিহত ফরিদের স্ত্রী মনোয়ারা সুমি স্বামীকে গুলিবিদ্ধ দেখে হাসপাতালে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে তাঁর জ্ঞান ফিরে আসে। নিহত ফরিদের এক মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। বড় মেয়ে ফারজানা ফারা প্রথম আলোকে বলেন, তার বাবার বালুর ব্যবসা রয়েছে। ডিশের ব্যবসাও দেখাশোনা করতেন। স্থানীয় যুবলীগ কর্মী ফয়সাল ও রাসেলই তার বাবাকে গুলি করেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা ডিশের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিতে চাচ্ছিলেন। বিষয়টি পুলিশকে বলা হলেও কিছুই করেনি। পুলিশ ঘটনাস্থলে থাকলে তার বাবার মৃত্যু হতো না।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এস এম মোস্তাইন হোসেন বলেন, শুক্রবার সকালে ডিশ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ডিসি রোড এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। কাউকে না পেয়ে পরিস্থিতি শান্ত দেখে পুলিশ চলে আসে। বিকেলে হঠাৎ করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে ও খোঁজখবর করা হলে কেউই নাম প্রকাশ করে কিছু বলতে চাননি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে চারজন প্রত্যক্ষদর্শী প্রথম আলোকে বলেন, শুক্রবার সকাল থেকে ডিশ ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে স্থানীয় এমদাদুল হক ওরফে বাদশা ও এম এম মুছার অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করেছে। নিহত ফরিদ বাদশার অনুসারী। বাদশা যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। জুমার নামাজের পর মুছার অনুসারী ফয়সাল, রাসেলসহ ৫০ থেকে ৬০ জন যুবক এসে মিয়া বাপের মসজিদ এলাকায় ডিশের লাইন কাটার চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে বাদশা তাঁর অনুসারী ফরিদসহ ৩০ থেকে ৪০ জন নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়। দুই পক্ষের লোকজনের হাতে অস্ত্র, মাথায় হেলমেট ছিল। গোলাগুলির একপর্যায়ে ফরিদ ঘটনাস্থলে নিহত হন। তাঁর বুকে গুলি লাগে।