ভালো ঘুমের ৭টি খাবার
এখন আমরা আর সেই ছোট্টটি নেই যে, মা পিঠ চাপড়ে, চাঁদ মামাকে ডাকার গান শুনিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিবেন। এখন আমাদের জীবনযাত্রায় যোগ হয়েছে নানা রকম কাজের চাপ, টেনশন, ড্রিপ্রেশন, অনিয়মিত খাওয়া-দাওয়া। এগুলোর কারণে যোগ হয়েছে নির্ঘুম রাত। সারাদিন পরিশ্রম করার পরেও অনেকে রাতের পর রাত ঘুমহীন কাটাচ্ছেন। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য অনেকে চিকিৎসকের পরামর্শে স্লিপিং পিলের সহায়তা নিয়ে থাকেন। আবার অনেকে বিনা প্রেসক্রিপশনে স্লিপিং পিল খেয়ে থাকেন।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই হোক আর বিনা প্রেসক্রিপশনেই হোক না কেনো স্লিপিং পিলের রয়েছে মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। ঘুম না আসার কারণে স্লিপিং পিল খেয়ে স্বাস্থ্যহানী করার কোনো প্রয়োজন নেই। এর চাইতে নজর দিন প্রাকৃতিক জিনিসের ওপর। আপনার ঘরেই এমন কিছু খাবার রয়েছে, যা কাজ করবে অনেকটা ঘুমের ঔষধের মতোই। আসুন তাহলে আজ আমরা জেনে নেই ভালো ঘুম হয়, সেই খাবারগুলো কী কী?
দুধ: ঘুমের ঔষধের মতো কাজ করতে বিশেষভাবে কার্যকরি যে খাবারটি তা হচ্ছে দুধ। গবেষকরা বলেন, দুধের ক্যালসিয়াম মেলাটোনিন উৎপন্ন করে, যা আমাদের দেহের ২৪ ঘণ্টার ঘুম ও জেগে থাকার সাইকেলটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। তাই ঘুম না আসলে ১ গ্লাস হালকা গরম দুধ পান করে নিন। দেখবেন খুব সহজেই ঘুম চলে আসবে।
ডিম: ঘুমের জন্য কার্যকরি আরেকটি সুপার ফুড হচ্ছে ডিম। গবেষণায় দেখা যায়, ডিম উচ্চ মাত্রার প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার, যা রক্তের চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে পুরোরাত নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবেন। তাই রাতের খাবারে রাখুন সেদ্ধ ডিম অথবা প্রোটিন সমৃদ্ধ কোনো খাবার।
কাঠ বাদাম: কাঠ বাদামকে সুপার ফুড বলা হয়। কারণ, কাঠ বাদামের ভিটামিন ও মিনারেলস আমাদের নানা রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। কাঠ বাদামের মিনারেল ম্যাগনেসিয়াম ঘুমের উদ্রেক করে। যখন আমাদের দেহে ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা কমে যায়, তখন আমাদের অনিদ্রার সমস্যা শুরু হয়, কাঠ বাদাম এই ম্যাগনেসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে।
মধু: ঘুমাতে যাওয়ার আগে মাত্র ১/২ চা চামচ মধু খাওয়ার অভ্যাস দারুণ কার্যকর। গবেষণায় দেখা যায়, মধুর প্রাকৃতিক চিনি আমাদের দেহের ইনসুলিনের মাত্রা বাড়ায় এবং ট্রাইপ্টোফেন নামক হরমোন খুব সহজে মস্তিষ্কে প্রবেশ করতে পারে। এতে করে ঘুমের উদ্রেক হয়।
কলা: ঘুম না আসলে একটি কলা খেয়ে নিন। কলার পটাশিয়াম মস্তিষ্ককে রিলাক্স করতে সহায়তা করে। কলার ম্যাগনেসিয়ামও আমাদের মাংসপেশি শিথিল করতে বিশেষভাবে কার্যকরি। ঘুমুতে যাওয়ার আগে কলা খান বা কলার স্মুদি তৈরি করে পান করুন, ঘুম আপনাআপনিই চলে আসবে।
হারবাল চা বা গ্রিন টি: গ্রিন টি বা হারবাল চায়ে রয়েছে থায়ানিন, যা ঘুমের জন্য বিশেষভাবে সহায়ক। ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১ কাপ গ্রিন টি বা অন্য যেকোনো হারবাল চা অনিদ্রা দূর এবং ঘুমের অন্যান্য সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
মিষ্টি আলু: মিষ্টি আলু পটাশিয়ামের জন্য অনেক ভালো একটি উৎস, যা আমাদের মাংসপেশী, নার্ভ শিথিল করতে কাজ করে। এতে করে আমাদের মস্তিষ্কও অনেকাংশে রিলাক্স হয়। মাত্র অর্ধেকটা পরিমাণে মিষ্টি আলু ঘুমের জন্য অনেক ভালো। কারণ, এতে রয়েছে পটাশিয়াম ও কার্বস।