জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি’র মিল্কেন ইনস্টিটিউট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ’য়ের এনভাইরনমেন্টাল অ্যান্ড অকুপেশনাল হেল্থ’য়ের করা গবেষণা বলছে, ঘন ঘন রেস্তোরাঁর খাবার খাওয়ার কারণে শরীরে ‘ফ্যালাইটস’ নামক ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের মাত্রা বেড়ে যায়। বিশেষত, গর্ভবতী নারী, শিশু এবং কিশোর-কিশোরীরা বেশি ক্ষতির শিকার হচ্ছে।
‘ফ্যালাইটস’ হল কয়েকটি রাসায়নিক উপাদানের সম্মিলিত নাম যা খাবার প্যাকেটজাত ও প্রক্রিয়াজাতকরণে ব্যবহার করা হয়। এর প্রধান ক্ষতিকর দিক হল শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করা, তবে আরও অনেক স্বাস্থ্যগত জটিলতার জন্যও দায়ী এটি।
গবেষণার প্রধান লেখক, জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির মিলকেন ইনস্টিটিউট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ’য়ের এনভাইরনমেন্টাল অ্যান্ড অকুপেশনাল হেলথ বিভাগে সহকারী অধ্যাপক অ্যামি জোটা বলেন, “এই গবেষণা ইঙ্গিত করে যে, ঘরে তৈরি খাবারে ‘ফ্যালাইটস’য়ের মাত্রা কম হবে।”
‘এনভাইরনমেন্ট ইন্টারন্যাশনাল’ শীর্ষক জার্নালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হেল্থ অ্যান্ড নিউট্রিশন সার্ভে (এনএইচএএনইএস) এর মাধ্যমে ২০০৫ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত সংগ্রহীত তথ্য নিয়ে এই গবেষণা করা হয়।
এছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় তারা কী খেয়েছে এবং সেই খাবার কোথা থেকে এসেছে- সে সম্পর্কে ১০,২৫৩ জন অংশগ্রহণকারীকে জিজ্ঞাসা করা হয়।
এরপর খাবার ও তাদের প্রসাবে ‘ফ্যালাইটস’য়ের মাত্রা নির্ণয়ের মাধ্যমে দুটোর মধ্যে সম্পর্ক খুঁজে বের করা হয়।
আরও : জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আউটরিচ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী
গবেষকরা বলেন, ৬১ শতাংশ মানুষ জানিয়েছে তারা আগের দিনই রেস্তোরাঁয় খাবার খেয়েছে।
পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, রেস্তোরাঁ থেকে কেনা স্যান্ডউইচই সব বয়সের মানুষের শরীরে থাকা ফ্যালাইটস’য়ের অতিরিক্ত মাত্রার ৩০ শতাংশের জন্য দায়ী।
গবেষণায় আরও জানা যায়, সব বয়সের মানুষের ক্ষেত্রেই এই সম্পর্ক থাকলেও কিশোর-কিশোরীদের ঝুঁকি সবচাইতে বেশি।
যেসব কিশোর-কিশোরী ফাস্টফুড কিংবা রেস্তোরাঁয় বেশি খায় তাদের শরীরে ‘ফ্যালাইটস’য়ের মাত্রা যারা ঘরের খাবার বেশি খায় তাদের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেশি।
বারকেলি’তে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার স্কুল অফ পাবলিক হেলথ’য়ের জুলিয়া ভারসাভস্কি বলেন, “হরমোনের ভারসাম্য নষ্টকারী রাসায়নিক উপাদান সবচাইতে বেশি ক্ষতি করে গর্ভবতী মা, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের। তাই তাদেরকে এই ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের সংস্পর্শে আসা থেকে রক্ষা করা সবচাইতে বেশি জরুরি।”
এর আগেও জোটা ও তার সহকর্মীদের করা আরেকটি গবেষণায় দেখা যায় যে, ফাস্টফুড খাওয়ার মাধ্যমে মানুষ অতিরিক্ত মাত্রায় ‘ফ্যালাইটস’য়ের সংস্পর্শে আসে। নতুন গবেষণাটির লক্ষ্য ছিল শুধু ফাস্টফুড নয়, বরং রেস্তোরাঁর সব ধরনের খাবার।
ছবি: রয়টার্স