বুঝে নিন কিডনি রোগের লক্ষণ
ডায়াবেটিসে আক্রান্তরা আগেভাগেই কিডনি রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। আর কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করলেই তার লক্ষণ প্রাথমিক অবস্থাতেই বুঝে ফেলা জরুরি। নয়তো সর্বনাশ হয়ে যাবে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে কিডনি স্থায়ী ক্ষতির শিকার হতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, প্রথম দিকে ডায়াবেটিস নেফ্রোলজি কোনো লক্ষণই হয়তো ধরতে পারবে না। অনেক সময় কিডনি রোগ দানা বাঁধার ৫-১০ বছর পর লক্ষণ মাত্র প্রকাশ পেতে শুরু করে। আপনি না জেনে-বুঝেই মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছে যেতে পারেন। আসলে কিডনি রোগ সিরিয়াস অবস্থায় না পৌঁছলে সাধারণত লক্ষণ প্রকাশ করে না।
তাই যারা বিশেষ করে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের বছরে একবার হলেও কিডনি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভালো। আপনার ডাক্তার মূত্রপরীক্ষা দিতে পারেন। অ্যালবুমিন ও ক্রিটেনাইনের আণুপাতিক হার এবং মাইক্রোঅ্যালবুমিনুরিয়া ইত্যাদি দেখা হয় এ পরীক্ষায়। আর রক্তপরীক্ষার মাধ্যমে সেরাম ক্রিটেনাইনের অবস্থা দেখে বোঝার চেষ্টা করা হয় কিডনি কতটা সঠিকভাবে কাজ করছে।
কিডনি বাজেভাবে কাজ করলে নিচের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে পারে-
১. হাত, পা এবং মুখে স্ফীতিভাব দেখা দেয়।
২. ঘুম ও মনোযোগ প্রদানে সমস্যা হতে থাকে।
৩. অবসাদ দেখা দেয়, বমি ভাব আসে।
৪. দুর্বলতা দেখা দেয়।
৫. রোগের শেষ পর্যায়ে চুলকানি এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে ওঠে।
৬. ঘুম ঘুম ভাব চলে আসে।
৭. হৃদস্পন্দনের নিয়মিত ছন্দ এলোমেলো হয়। কারণ রক্তে পটাশিয়াম বেড়ে যায়।
৮. পেশিতে আকস্মিক ঝাঁকুনি লাগা।
কিডনি রোগ বাড়তে থাকলে রক্তের আবর্জনা দূর করতে পারে না তারা। ফলে ক্রমেই এসব আবর্জনা দেহে জমা হতে থাকে। এগুলো বিষাক্ত হয়ে ওঠে। এ অবস্থায় পৌঁছলে তাকে বলা হয় ইউরেমিয়া। শেষের দিকে রোগীরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে থাকেন। আচ্ছন্নতা কাজ করে।
যদি আগেভাগেই কিডনি রোগের খবর পাওয়া যায় তবে রোগের আগ্রাসনের গতি ধীর করে দেওয়া সম্ভব। একে থামিয়ে দেওয়া যায়, এমনকি ভালো করাও সম্ভব। রোগ খুব বেশি দূর এগোলে কিডনি ফেউলুরের মতো ঘটনা ঘটে। তার আগেই এ চিহ্নিত করা জরুরি। রক্তের দূষিত উপাদান ফিল্টার না করতে পারলে ফেল করে কার্যক্রম।
এমন অবস্থায় পৌঁছলে ডায়ালাইসিস কিংবা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হয়। নয়তো বাঁচা যায় না। কিডনি রোগ প্রতিরোধই সর্বোত্তম উপায়। রোগকে বাসা বাঁধতে দেওয়া যাবে না। সময়মতো চিকিৎসা দিতে হবে।