আজ ঢাকা আসছেন পোপ
---
ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের প্রধান ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা নিয়ে বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় আসছেন আজ বৃহস্পতিবার। বিকেলে ঢাকায় এসে তিনি অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গেও দেখা করবেন।
পোপের আগমন উপলক্ষ্যে এক কূটনৈতিক জানান, পোপ ফ্রান্সিসের বাংলাদেশে সফর গত বছরই ঠিক করা হয়েছে। এমন এক সময় তিনি মিয়ানমার ও বাংলাদেশ সফর করছেন যখন মিয়ানমার রোহিঙ্গা নৃগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনযজ্ঞ ও গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিকভাবে প্রবল চাপে পড়েছে। পোপ মিয়ানমারে নৃগোষ্ঠীগুলোসহ সমাজের সবার অধিকার ও সম্মান প্রতিষ্ঠার দাবি জানিয়েছেন।
জানা গেছে, পোপের বাংলাদেশ সফরেও শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা থাকবে। পোপ ফ্রান্সিস প্রথমত ভ্যাটিকানের রাষ্ট্রপ্রধানরূপে বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় সফরে আসছেন। দ্বিতীয়ত, ক্যাথলিকমণ্ডলীর প্রধান ধর্মগুরু ও প্রধান পালক হিসেবে খ্রিস্টান সমাজের কাছে তিনি পালকীয় সফর করবেন। আজ বিকেলে ঢাকায় পৌঁছানোর পর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পোপকে স্বাগত জানাবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে পোপ ঢাকার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতার জন্য আত্মত্যাগকারী বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন।
এদিকে পোপের আগমন উপলক্ষে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে সাভার জাতীয় স্মৃতিসৌধ কর্তৃপক্ষ। সাভার গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, আজ বিকেল ৪টায় ঢাকা থেকে সড়কপথে জাতীয় স্মৃতিসৌধে এসে পৌঁছাবেন পোপ ফ্রান্সিস।
জানা গেছে, সাভার থেকে ফিরে পোপ ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। এরপর আজ সন্ধ্যায় পোপ বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের পর বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ, নাগরিক সমাজ ও কূটনৈতিক সম্প্রদায়ের উদ্দেশে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেবেন।
পোপ আগামীকাল সকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রার্থনায় অংশ নেবেন। অনুষ্ঠানে ১৬ জন ডিকনকে যাজক পদে অভিষিক্ত করা ছাড়াও অনাথ, মাদকাসক্ত, মিশনারি স্কুলের শিক্ষাথী, অন্য ধর্ম ও মণ্ডলীর সদস্যদের সঙ্গে তিনি বিশেষ সাক্ষাৎ করবেন। আগামীকাল বিকেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও তিনি বৈঠক করবেন। ঢাকায় আনুষ্ঠানিকতা শেষে আগামী শনিবার বিকেল ৫টার দিকে রোমের উদ্দেশে পোপের ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, আজ থেকে ৩১ বছর আগে ১৯৮৬ সালের নভেম্বর মাসেই পোপ দ্বিতীয় জন পল বাংলাদেশে আসেন। এর আগে ভয়াবহ জলোচ্ছ্বাসের পর ১৯৭০ সালের ২৬ নভেম্বর ঢাকায় বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার জন্য নেমেছিলেন পোপ ষষ্ঠ পল। সংশ্লিষ্টরা বলছে, পোপ ফ্রান্সিসের এ সফর বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে নতুন করে তুলে ধরবে। বিশেষ করে বিশ্বে ক্রমবর্ধমান উগ্রবাদের মধ্যেও এ দেশে ধর্মীয় বৈচিত্র্য ও সহাবস্থান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমাদৃত। পোপ তাঁর ঢাকা সফরে একে আরো উৎসাহিত করতে পারেন।