রংপুরে সংঘর্ষ: ২ ইউপি সদস্য গ্রেফতার
---
রংপুর প্রতিনিধি : ধর্ম অবমাননার অভিযোগে রংপরে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ফজলু ও জয়নালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তারা দুজনই সদর উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য।
বৃহস্পতিবার রাতে মোমিনপুর ইউনিয়ন থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এ নিয়ে গত সাত দিনে দুই মামলায় ১৬১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, তাদের বিরুদ্ধে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে।
তিনি জানান, তাণ্ডবের ঘটনায় গঙ্গাচড়া ও কোতোয়ালি থানায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। একটি ঠাকুরপাড়া গ্রামে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও মালামাল লুট করার ঘটনায়। অপরটি পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা প্রদান সংক্রান্ত। দুটি মামলারই বাদি পুলিশ।
ইসলাম ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গত ৬ নভেম্বর রংপুর সদর উপজেলার খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়াশাহ গ্রামের মুদি দোকানি রাজু মিয়া গঙ্গাচড়া থানায় তথ্য প্রযুক্তি আইনে টিটু রায়ের (৪০) বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। টিটু খলেয়া ইউনিয়নের শলেয়াশাহ গ্রামের মৃত খগেন রায়ের ছেলে।
এরপর গত ১০ নভেম্বর জুমার নামাজের পর টিটু রায়ের ফাঁসির দাবিতে শলেয়াশাহ বাজারে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করে স্থানীয়রা।
এরপরেই কয়েক হাজার মানুষ ঠাকুরবাড়ি গ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করে বলে ক্ষতিগ্রস্তদের অভিযোগ।
এ নিয়ে স্থানীয় মুসল্লি ও গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন পুলিশসহ ১৫জন।
পুলিশ জানায়, ঠাকুরপাড়ায় হামলার ঘটনায় এখন পর্যন্ত মূল সন্দেহভাজন ওলামা দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলার সভাপতি এনামুল হক মাজেদী, খলেয়া ইউনিয়নের বিএনপি নেতা মাসুদ রানা, রংপুর জেলা পরিষদের প্রকৌশলী ফজলার রহমানসহ ইন্ধন ও অর্থের জোগানদাতাদের কাউকেই গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
গত মঙ্গলবার ভোরে টিটুকে নীলফামারী থেকে গ্রেফতার করা হয়। টিটুকে গ্রেফতারের পর বুধবার মামলাটি রংপুর ডিবি পুলিশের (উত্তর) কাছে স্থানান্তর করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বুধবার দুপুরে গঙ্গাচড়া আমলি আদালতে টিটুকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন জানায় পুলিশ । শুনানি শেষে আদালতের বিচারক দেবাংশু কুমার সরকার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।