ফেসবুককে সাবধান!
---
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকের জনপ্রিয়তা যেমন দিনে দিনে বাড়ছে তেমনই বাড়ছে ফেসবুক স্ক্যামের সংখ্যাও। বহু জালিয়াত ও প্রতারক ফেসবুককে ব্যবহার করছে তাদের কার্যসিদ্ধির জন্য।
এই ধরনের প্রতারকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষ যেমন বাড়াচ্ছে নজরদারি, তেমনই এদের হাত থেকে বাঁচতে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে ফেসবুক গ্রাহকদেরও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতারক থাকতে পারে আপনার বন্ধুর ছদ্মবেশেই। সাবধান! ফেসবুকে এই ধরনের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট ভুলেও অ্যাকসেপ্ট করবেন না। কী ধরনের সতর্কতা নিতে বলছেন তাঁরা?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক সময়ে ফেসবুকে আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে ইতিমধ্যেই রয়েছেন এমন কোনও বন্ধুর কাছ থেকে আপনি পেতে পারেন ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট। এমনটা হলে অনেকে ভাবেন, ওই বন্ধু হয়তো সাময়িকভাবে নিজের প্রোফাইলটি ডিঅ্যাক্টিভ বা ডিলিট করে দিয়েছিলেন, তারপর প্রোফাইলটি নতুন করে অ্যাক্টিভেট করে পুনরায় আপনাকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছেন। সেই ভেবে অনেকেই ওই ধরনের রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করে নেন।
তাছাড়া পরিচিত জনের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টে সাধারণত কেউ সন্দেহও করেন না। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মত হল, এই ধরনের বন্ধুত্ব-অনুরোধের নেপথ্যেই সাধারণত লুকিয়ে থাকে ফেসবুক প্রতারকরা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রতারকরা যা করে তা হল, আপনার কোনও ফেসবুক বন্ধুর প্রোফাইল পিক আর অন্যান্য ইনফরমেশন ব্যবহার করে একটি ডুপ্লিকেট প্রোফাইল তৈরি করে। বাইরে থেকে সেই প্রোফাইলটি দেখতে অবিকল অরিজিনাল প্রোফাইলটির মতোই। ফলে আপনার মনেও সন্দেহের উদ্রেক হয় না।
আপনি সরল বিশ্বাসে তাঁর ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করে নেন। আর তার পরেই শুরু হয় সেই প্রতারকের কীর্তিকলাপ। একবার আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে ঢুকে পড়ার পরে তারা বিশেষ কৌশলে আপনার প্রোফাইলটি হ্যাক করে নেয়। ফলে আপনার সম্পূর্ণ প্রোফাইলটির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় তাদের হাতে।
তারা চাইলে ইচ্ছেমতো আপনার প্রোফাইল থেকে স্টেটাস আপডেট দিতে পারে, অন্য বন্ধুদের সঙ্গে আপনার বকলমে চ্যাট করতে পারে, তাদের কাছ থেকে কোনও অছিলায় টাকা চাইতে পারে, কিংবা তাদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু করার চেষ্টা করতে পারে। আপনার অন্য ফেসবুক বন্ধুরা জানবেন যে, যা করার আপনিই করছেন। ফলে বিপদে পড়বেন আপনি। ওদিকে প্রতারক তার কাজ হাতিয়ে সরে পড়বে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন ঘটনা বহুবার ঘটেছে, যেখানে কোনও এক ব্যক্তির প্রোফাইল হ্যাক করে তার বন্ধুদের কাছে কোনও প্রতারক মেসেজ পাঠিয়ে দিয়েছে যে, সে খুব বিপদে পড়েছে, এবং তার বেশ কিছু টাকার দরকার। সেই সঙ্গেই সে পাঠিয়েছে বিশেষ একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর। যাঁরা মেসেজ পাচ্ছেন তাঁদের সকলে না হলেও, একজন দু’জন সরল বিশ্বাসে সেই অ্যাকাউন্টে পাঠিয়েও দিয়েছেন টাকা। বলা বাহুল্য, সেই টাকা হস্তগত হয়েছে ওই প্রতারকের।
কিন্তু তার দায় গিয়ে পড়েছে যাঁর প্রোফাইল হ্যাক হয়েছে, তাঁর উপরেই। কাজেই একদিকে যেমন আপনার ফ্রেন্ড লিস্টে ইতিমধ্যেই রয়েছেন এমন ব্যক্তির ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্ট করার ব্যাপারে আপনাকে সতর্ক হতে হবে, তেমনই ফেসবুকে নিজের প্রোফাইলের প্রাইভেসি সেটিংগসও নির্বাচন করতে হবে অত্যন্ত বিবেচনার সঙ্গে। তবেই বাঁচা যাবে প্রতারকদের হাত থেকে। –এবেলা