বিশ্বে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত রোহিঙ্গারা
---
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বলেছেন, রোহিঙ্গারা পৃথিবীর সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী। একই সঙ্গে তাদের মৌলিক মানবাধিকার রক্ষার উপরও গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের এক বৈঠকে নিজের বক্তব্যে এসব কথা বলেন মাসুদ বিন মোমেন। খবর ভয়েস অব আমেরিকার।
এ বৈঠকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তাবও পাস হয়েছে; যেখানে অবিলম্বে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে চলমান সামরিক অভিযান শেষ করতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে স্বেচ্ছায় তাদের বাংলাদেশ থেকে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করতে ও তাদের পূর্ণ নাগরিকত্ব দেয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইসলামী সহযোগী সংস্থার (ওআইসি) পক্ষে আনা এ প্রস্তাবটি পাস হয় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিটিতে। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৩৫টি। ভোট দেয়নি ২৬টি দেশ। প্রস্তাবের বিপক্ষে যেসব দেশ ভোট দিয়েছে সে দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের নিকট প্রতিবেশি চীন ছাড়াও রয়েছে রাশিয়া, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম ও লাওস।
প্রস্তাবটি এখন ১৯৩ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে চূড়ান্ত ভোটের জন্য উঠবে। ডিসেম্বরে এ ভোট অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে ওআইসির পক্ষে কথা বলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত সৌদি আরবের প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মৌলামি। তিনি বলেন, মিয়ানমারে ধর্মীয় ঘৃণাপ্রসূত আরেকটি অমানবিক অধ্যায় রচিত হচ্ছে, যা প্রায় ৬ লাখ ২০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিমকে বাংলাদেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য করছে।
রোহিঙ্গাদের উপর চলমান সহিসংতার বিষয়ে ওআইসির উদ্বেগের কথাও জানান তিনি।
সহিংসতার জেরে যাদের পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে তাদের ৬০ শতাংশিই শিশু বলেও উল্লেখ করা হয়েছে প্রস্তাবে।
মিয়ানমারে, বিশেষ করে রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতনের বিষয়ে গভীর উদ্বেগও জানানো হয়েছে প্রস্তাবে। কোনো ধরনের বৈষম্য ছাড়া ওই অঞ্চলে সবার মানবাধিকার সহযোগিতা পাওয়ার বিষয়েও জোর দেয়া হয়েছে প্রস্তাবে।
একই সঙ্গে জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে অ্যান্তোনিও গুতেরেসের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে মিয়ানমারে বিশেষ দূত নিয়োগের বিষয়ে।
তবে মিয়ানমারের দাবি এ প্রস্তাব ত্রুটিপূর্ণ। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত হাউ দো সুয়ান কমিটিকে বলেছেন, খসড়া প্রস্তাবে যা কিছু বলা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ রয়ে গেছে।
প্রস্তাবটি এক পক্ষের অভিযোগের উপর ভিত্তি করে আনা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
এ প্রস্তাবের মাধ্যমে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, এর মাধ্যমে মিয়ানমারের জনগণকে অপমান করা হয়েছে।