কাঁধে খাঁচা নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দম্পতি, বেরোলো যমজ শিশু
---
নিউজ ডেস্ক : কাঁধে দুটি খাঁচা নিয়ে কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে প্রবেশ করে এক দম্পতি। আর এই খাঁচার একটিতে ছিল সদ্য জন্ম নেওয়া ফুটফুটে দুটি সন্তান। আর অন্য খাচায় ছিল নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দ্রব্য। কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্পে তেমনই এক দৃশ্য দেখা গেল। রাখাইন রাজ্যের মংডুর গজিবিল এলাকার খালেদা বেগম (১৮) ও আহমদ উল্যা (২৩) দম্পতির জীবন নিয়ে সংশয় থাকলেও সদ্যজাত যমজ শিশুদের অতি যত্নে বুকে আগলে ঠিকই বৃহস্পতিবার এ শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নিয়েছেন তারা। মিয়ানমারে চলমান হত্যা-নির্যাতনে দিশেহারা রোহিঙ্গা মুসলিমরা। প্রাণ বাঁচাতে ছুটে আসছেন সীমান্তবর্তী দেশ বাংলাদেশে। গরু-ছাগলসহ যে যা পারছেন সঙ্গে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। কেউ বা সব হারিয়ে খালি হাতে আসছেন। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছোট ছোট ছেলে-মেয়ে কোলে নিয়ে এবং টোল-টুপলা মাথায় নিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আসার চিত্র সীমান্ত এলাকায় দাঁড়ালেই চোখে পড়ছে।
আহমদ উল্লা জানান, ৩০ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী যখন তাদের বাড়িতে হামলা চালায় তখন কিছুটা অসুস্থতা বোধ করছিলেন খালেদা বেগম।
পরিবারে নতুন সদস্যের আগমন আসন্ন সেই রকম প্রস্তুতিও ছিল। কিন্তু সেনাবাহিনীর আকস্মিক হামলায় ঘর ছাড়তে হলো তাদের। পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় শুধু ঘরই নয়; দেশ ছাড়ার জন্যও বের হয়েছিলেন এ দম্পতি। একদিন জঙ্গলে হাঁটার পর ১ সেপ্টেম্বর সীমান্তের কাছে পাহাড়ে যমজ ছেলে সন্তানের জম্ম দেন খালেদা বেগম।
যমজ সন্তান প্রসবের পর শরীর খারাপ থাকায় সীমান্তের কাছে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকতে হয়েছে, এখন সময় করে চলে এসেছেন। শিশু সন্তান নিয়ে বাংলাদেশে আসার পথে খাবার ও পানি সংকটে পড়েছিল এ দম্পতি এবং তাদের সঙ্গে থাকা রোহিঙ্গারা। তারপরও দুই সন্তানকে জীবিত নিয়ে নিরাপদে আসতে পেরেছি এটাই সান্ত্বনা বললেন খালেদা বেগম।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নে ইতোমধ্যে প্রায় দুই লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশন ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ইতোমধ্যে প্রায় পৌনে দুই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। এ সংখ্যা তিন লাখ ছাড়িয়ে যেতে পারে।