সিদ্দিকুরের ‘চোখের বিনিময়ে’ সাত কলেজে পরীক্ষার রুটিন
---
পরীক্ষার রুটিনের দাবিতে আন্দোলনে পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেলে তরুণ সিদ্দিকুর রহমানের চোখ হারানোর ২৩ দিনের মাথায় অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজে ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স (নতুন ও পুরাতন সিলেবাস অনুযায়ী) মাস্টার্স পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
রবিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ বিভাগ থেকে গণমাধ্যম কর্মীদের রুটিন জানিয়ে মেইল দেয়া হয়। সময়সূচি অনুযায়ী আগামী ১০ সেপ্টেম্বর পরীক্ষা শুরু হবে এবং পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ৩১ অক্টোবর। পরীক্ষা আরম্ভ হবে দুপুর ২টায়।
ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, বেগম বদরুন্নেছা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, তিতুমীর কলেজ ও বাঙলা কলেজের পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ সময়সূচি জানার জন্য স্ব স্ব কলেজে যোগাযোগ করতে বলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে ব্যবহারিক পরীক্ষার স্থান, তারিখ ও সময় পরে জানান হবে।
পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র স্ব স্ব কলেজের অধ্যক্ষগণ কর্তৃক মনোনীত প্রতিনিধির মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিস থেকে সংগ্রহ করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইস্যুকৃত প্রবেশপত্র ছাড়া কোনো পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। পরীক্ষা চলাকালীন পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল ফোন ও যে কোনো প্রকার ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস বহন করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
পরীক্ষার কেন্দ্রসমূহ হলো- বেগম বদরুন্নেছা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের পরীক্ষার কেন্দ্র থাকবে ঢাকা কলেজ। ঢাকা কলেজের পরীক্ষার কেন্দ্র হবে ইডেন কলেজ। ইডেন কলেজের পরীক্ষা কেন্দ্র হবে বেগম বদরুন্নেছা কলেজ। তিতুমীর কলেজের পরীক্ষার কেন্দ্র হবে বাঙলা কলেজ এবং বাঙলা কলেজের পরীক্ষার কেন্দ্র হবে তিতুমীর কলেজ।
এই সাত সরকারি কলেজ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্ত হয় গত ১৬ ফেব্র“য়ারি। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের পর বিপাকে পড়ে শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার সময়সূচি না দেয়ায় তৈরি হয় অনিশ্চয়তা। এই অবস্থায় গত ২০ জুলাই পরীক্ষার রুটিনসহ পাঁচ দফা দাবিতে শাহবাগে বিক্ষোভে নামে সাত সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা মূল সড়কে মিছিল করতে চাইলে পুলিশ বাঁধা দেয় এবং এক পর্যায়ে ছোঁড়া কাঁদানে গ্যাসের শেলের আঘাত গিয়ে লাগে তিতুমীর কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুরের চোখে। সেখানেই লুটিয়ে পড়া তরুণের ডান চোখ পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যায় আঘাতে। অপর বাম চোখ রক্ষায় ঢাকার চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও ভারতের নেত্রাইয়ে শঙ্কর নেত্রালয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়। সেখানে চিকিৎসা শেষে গত শুক্রবার দেশে ফিরেছেন এই তরুণ। সিদ্দিকুর বাম চোখে জ্যোতি ফিরে পাবেন কি না, সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। দ্য টাইমস