যে কাজে রোজার কাযা ও কাফফারা আদায় করতে হবে
---
ইসলাম ডেস্ক : আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের উপর; যেন তোমরা তাকওয়া বা পরহেযগারী অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)
বান্দার জন্য রমজান মাসের রোজা আল্লাহ তাআলা ফরজ করেছেন। যারা ইচ্ছাকৃতভাবে রোজা ভেঙে ফেলবে বা নষ্ট করবে; তাদের জন্য রোজার কাযা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করতে হবে।
যে সব কাজে রোজার কাযা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করতে হবে তা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-
>> স্ত্রী সহবাস
রোজা রেখে দিনের বেলায় স্ত্রী সহবাস করলে; চাই তাতে বীর্যপাত হোক আর না হোক। সে ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ওপর কাযা ও কাফফারা জরুরি হবে। এ সম্পর্কে একটি দীর্ঘ হাদিসে রয়েছে-
‘এক ব্যক্তি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নিকট এসে বলল, আমি রোজা রেখে স্ত্রী সহবাস করেছি। বিশ্বনবি তার উপর কাফফারা আবশ্যক করেছিলেন। (বুখারি, তিরমিজি, মুসনাদে আহমদ)
>> মুহাম্মাদ ইবনে কা’ব রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘বিশ্বনবি ঐ ব্যক্তিকে (যে স্ত্রী-সহবাসে লিপ্ত হয়েছিল) কাফফারা আদায়ের সঙ্গে সঙ্গে কাযা আদায়েরও আদেশ করেছিলেন।’ (মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক)
>> পানাহার
ইসলামি শরিয়তের ওজর ব্যতিত দিনের বেলায় ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কিছু পানাহার করলে ওই ব্যক্তির ওপর কাযা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করা জরুরি।
এক ব্যক্তি রমজানে রোজা রেখে (ইচ্ছাকৃতভাবে) পানাহার করলো। বিশ্বনবি তাকে আদেশ করলেন, ‘সে যেন একজন দাস আযাদ করে বা দুই মাস রোজা রাখে বা ৬০জন মিসকিনকে খাবার খাওয়ায়।’ (দারাকুতনি)
>> ইমাম জুহরি রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘রমজানে রোজা রেখে যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে পানাহার করবে; তার হুকুম ইচ্ছাকৃতভাবে দিনে সহবাসকারীর অনুরূপ।’ অর্থাৎ তাকে কাযা ও কাফফারা উভয়টি আদায় করতে হবে।
>> ধূমপান
বিড়ি-সিগারেট, হুক্কা পান করলেও রোজা ভেঙে যাবে এবং এ কাজে কাযা ও কাফফারা উভয়টি জরুরি হবে।
>> সাহরির শেষ সময় জেনেও যারা পানাহার করে
সুবহে সাদিক হয়ে গেছে জানা সত্ত্বেও আজান শোনা যায়নি বা এখনো ভালোভাবে আলো ছড়ায়নি এ ধরনের ভিত্তিহীন অজুহাতে খাওয়া দাওয়া করে বা স্ত্রী সহবাসে লিপ্ত হয়। এতে ওই ব্যক্তির রোজা বিশুদ্ধ হবে না। আর যদি রোজার নিয়ত করার পর কেউ এমনটি করে থাকে তাহলে কাযা-কাফফারা দুটোই জরুরি হবে। এ ব্যাপারে সুরা বাক্বারার ১৮৭নং আয়াতে সুস্পষ্ট করে বর্ণনা করা হয়েছে।
আল্লাহ তাআলা রোজার জন্য ক্ষতিকর ও রোজা নষ্টের জন্য দায়ী উল্লেখিত বিষয়গুলো থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।