ভিশন-২০৩০, বিএনপি পলিটিক্যাল স্ট্যান্ডবাজি : কাদের
---
নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির কেমন করে দেশ চালাবে সেই রূপরেখা ভিশন ২০৩০ নিয়ে আসছেন খালেদা জিয়া। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই ঘোষণা হতে পারে এই পরিকল্পনার। তবে ঘোষণার আগেই ‘ভিশন-২০৩০’ কে আক্রমণ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের অনুকরণ করে বিএনপি পলিটিক্যাল স্ট্যান্ডবাজি করছে।
রবিবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়ে আয়োজিত এক কর্মশালায় ওবায়দুল কাদের এ কথা বলেন। ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে সংসদ সদস্যদের করণীয়’ নামে এই কর্মশালায় সংসদ সদস্যদেরকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে প্রচারের কৌশল শেখান প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়।
রাষ্ট্র পরিচালনায় আওয়ামী লীগের দুটি লক্ষ্য রয়েছে। একটি ভিশন ২০২১ এবং ভিশন ২০৪১। এর বিপরীতে বিএনপি চেয়ারপারসন নিয়ে আসছেন ভিশন-২০৩০। শিগগির তিনি সংবাদ সম্মেলন করে এর ঘোষণা করবেন।
বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, এই রূপরেখায় প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী ক্ষমতায় ভারসাম্য আনা, রাষ্ট্রের এককেন্দ্রিক চরিত্র ঠিক রেখে বিদ্যমান সংসদীয় ব্যবস্থার সংস্কার ও সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট করা; ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, সুনীতি, সুশাসন ও সুসরকারের সমন্বয় ঘটানো; গণভোট ফিরিয়ে আনা; নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, মানবাধিকার কমিশনসহ সাংবিধানিক ও আধা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা; উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগসংক্রান্ত আইন করা; ২০৩০ সালের মধ্যে দেশকে একটি উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা, মাথাপিছু আয় পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার এবং প্রবৃদ্ধি দুই অঙ্কে নেওয়ার জন্য বিএনপির পরিকল্পনায় বিস্তারিত থাকবে।
এ ছাড়া শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি, যোগাযোগ, শিল্প, বাণিজ্য, কর্মসংস্থান সৃষ্টিসহ বিভিন্ন খাতওয়ারি পরিকল্পনাও থাকবে। দলটির নেতারা বলছেন, জনগণ ও আন্তর্জাতিক বন্ধুদের বার্তা দেওয়ার লক্ষ্যে এই রূপরেখা তৈরি করা হচ্ছে।
আওয়ামী লীগ যেখানে ভিশন ২০৪১ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে বিএনপি ১১ বছর পিছিয়ে থাকার সমালোচনা করছেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমাদের ভিশন ২০২১, আমাদের ভিশন ২০৪১।এখন আমরা দেখছি, আমাদের দেখাদেখি পাল্টাপাল্টি লোক দেখানো একটা ভিশনের কথা শুনতে পাচ্ছি। সেটা নাকি ভিশন ২০৩০।’
‘এর লক্ষ্যটা কি? এর লক্ষ্যটা হচ্ছে হাওয়া ভবনের মতো আরেকটা খাওয়া ভবনের ভিশন। এটাই হচ্ছে ভিশন ২০৩০। কিন্তু আমাদের তো সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে কোনো হাওয়া ভবন নেই, খাওয়া ভবন নেই। কোনো খোয়াব ভবনও নেই’-বলেন আওয়ামী লীগ নেতা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ কিছু করলে সেটার পাল্টাপাল্টি কিছু করতে হবে। তাই এটাকে আমি বলবো, একটা পলিটিক্যাল স্ট্যান্ডবাজি। এই স্ট্যান্ডবাজি বাংলাদেশের লোক ভালই বোঝে। ডিজিটাল বলতে বাংলাদেশের লোক জয়কে চেনে। এ জন্য জয়কে তারা ভয় পায়, তার মেধাকে তারা ভয় পায়।’
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
কর্মশালায় সংসদ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে কিভাবে ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, ইউটিউব ইত্যাদি ব্যবহার করে ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় নতুন একাউন্ট তৈরি করে একাউন্ট খোলা যায়, কনটেন্ট তৈরি করে দৈনন্দিন ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কীভাবে জনগণের সাথে কার্যকরী দ্বিমুখী যোগাযোগ গড়ে তোলা যায়।
এছাড়া অনলাইনে কিভাবে উপস্থিতি নিশ্চিত করা যায়, একাউন্ট ভেরিফাইড করা যায়, অনলাইনে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ অন্যান্য বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
রিসোর্স ফান্ড হিসেবে এ কর্মশালা পরিচালনা করছেন তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের এলআইসিটি প্রকল্পের স্যোশাল মিডিয়া স্পেশালিস্ট হাসান বেনাউল ইসলাম, সিআরআইএ এর সহকারী সমন্বয়ক প্রকৌশলী তন্ময় আহমেদ এবং পলিসি এনালিস্ট ব্যরিস্টার শাহ আলী ফরহাদ। আগামী ৮ ও ৯ মে আরও ১০০ জন সংসদ সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।