আখাউড়ায় দেড় বছরের আশা মণিকে তার মা বিক্রি করেন ৫০০টাকায়
নিজস্ব প্রতিনিধি : আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গারামপুর গ্রামের এক স্ত্রী তার সন্তানকে বিক্রি করে অঝরে কাঁদছেন। সংসারে অভাব-অনটনের কারণে হার মানলেন তিনি । অভাবের তাড়না সহ্য করতে না পেরে মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে আশা মণি (দেড় বছর) নামে এক শিশুকে মা বিলকিছ বেগম বিক্রি করে দিয়েছেন।
গত ২০ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় এ ঘটনা ঘটলেও রোববার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে বিলকিছের আর্তনাদে বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। বিলকিছ ওমর ফারুকের স্ত্রী সরাইল উপজেলার পানিশ্বর গ্রামের দিল্লুর আলীর মেয়ে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভাববের তাড়নায় গত ২০ জানুয়ারি বিলকিছ তার দেড় বছর বয়সী মেয়ে শিশু আশা মণিকে মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে আখাউড়া উপজেলার নারায়ণপুর গ্রামের রুহুল আমিন নামে এক ব্যক্তি তার নিঃসন্তান আত্মীয়ের জন্য কিনে নেন।
ওদিন রাতে নিজ সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দিলেও সন্তানের জন্য রুহুলের বাড়িতে গিয়ে আর্তনাদ করছেন মা বিলকিছ। তবে রুহুল তার সেই নিঃসন্তান আত্মীয়ের ঠিকানা দিচ্ছেন না বিলকিছকে।
বিলকিছ বেগম বলেন, আমার সন্তান জন্মের পর স্বামী আমাকে ছেড়ে চলে গেছে। এজন্য সন্তানকে নিয়ে আখাউড়ায় চলে আসি কাজের সন্ধানে। কোনো কাজ না পেয়ে অভাবের কারণে ছন্নছাড়া হয়ে পড়ি। তাই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ৫০০ টাকার বিনিময়ে রুহুল আমিনের হাতে আশা মণিকে তুলে দেই।
তিনি আরও বলেন, সন্তানকে অন্যের হাতে তুলে দেয়ার পর এক রাতের জন্যও ঘুমাতে পারিনি। সন্তান তুলে দেয়ার সময় শর্ত ছিল- মন চাইলে আমি সন্তানের মুখ দেখতে পারবো।
এ জন্য গত ৯ দিন ধরে রুহুল আমিনের বাড়িতে বসে কাঁদছি। কিন্তু ওরা এখন আমাকে সন্তানের দেখতে না দিয়ে উল্টো এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে আখাউড়া পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. মন্তাজ মিয়া মুঠোফোনে বলেন, ঘটনাটি আমি শুনে রুহুল আমিনের মাকে ডেকে এনে বলে দিয়েছে ওই শিশুটিকে যেন তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেয়। তবে তিনি বলেছেন, শিশুটি এখন তাদের কাছে নেই। তাদের এক আত্মীয়ের কাছে আছে। ওই নারীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সুরাহা করার জন্য বলে দিয়েছি আমি।