জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য মাত্র ১০৯
---
পরাজয়ের একটা ক্লান্তি আছে। হারের বোঝা বইতে থাকা দলকে তাই ভারাক্রান্ত দেখায়। নিজ দেশের মাটিতে একের পর এক সাফল্যের চূড়া ছুঁয়ে বিদেশ যাত্রার প্রথম পরীক্ষাতেই বাংলাদেশ ব্যর্থ হলো। নিউজিল্যান্ড সফরটায় বাংলাদেশ যে একটিও জয় যে পাচ্ছে না, তা প্রায় নিশ্চিত। তিন ওয়ানডে, তিনটি টি-টোয়েন্টির পর এবার দুই টেস্ট সিরিজের দুটিতেও শূন্য হাতে ফেরার অপেক্ষায় বাংলাদেশ। ওয়েলিংটন টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭৩ রানে অলআউট বাংলাদেশ। জয়ের জন্য নিউজিল্যান্ডের লক্ষ্য মাত্র ১০৯। ২ ওভারে বিনা উইকেটে ৭ রান তারা তুলেও ফেলেছে।
পুরো এক দিন বৃষ্টিতে ভেসে গেলেও নিউজিল্যান্ডের জয় এখন সময়ের অপেক্ষা। আজ আরও আধ ঘণ্টার মতো খেলা হওয়ার সম্ভাবনা। দুবার ওয়ানডেতে ‘বাংলাওয়াশ’ হওয়ার শোধ নিউজিল্যান্ড তুলে নিতে চলেছে এক সফরেই তিনবার বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করে!
এই সফরে বাংলাদেশের প্রাপ্তি যে একেবারেই ছিল না, তাও নয়। কিছু কিছু লড়াইয়ের টুকরো ছবি তো ছিলই। কিন্তু সেই টুকরো ছবিগুলো মিলিয়ে একটা পরিপূর্ণ চিত্র বানাতে পারল না বাংলাদেশ। বিশেষ করে টেস্ট খেলাটায় এক সেশনের ভুল যে শুধরে নিতে না পারলে তার বড় মাশুল গুনতে হতে পারে, সেটাও নতুন করে শিখল দল। এই টেস্টেও তৃতীয় দিন শেষেও এগিয়ে ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু আজ চতুর্থ দিনটাই বাংলাদেশকে একেবারে ছিটকে দিল। প্রথমে ব্যাটে এরপর বোলিংয়ে বাংলাদেশকে হারের মুখে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করিয়ে দিল নিউজিল্যান্ড।
প্রথম ইনিংসে ২৫৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলা নিউজিল্যান্ড শেষ তিন জুটিতে যোগ করল ৯৮ রান। ক্রিকেট জুটি খেলা—নিউজিল্যান্ডের শেষটা দেখেও বুঝল না বাংলাদেশ! অধিনায়কত্ব যে একদমই পছন্দ না, দুই ইনিংসে আউটের ধরন দিয়ে তামিম ইকবাল বুঝিয়ে দিলেন। লাঞ্চের আগে ১০ ওভারে ওই একটাই পতন। কিন্তু চার বিরতির আগে আরও চারটি এবং চা বিরতির পর শেষ পাঁচটি উইকেট হারিয়ে অলআউট হয়ে গেল বাংলাদেশ। ৩২ ওভারের মধ্যে শেষ ৯ উইকেট নেই!
সৌম্য সরকারের ৩৬, মাহমুদউল্লাহর ৩৮ ছাড়া মিডল ও লোয়ার মিডল অর্ডারে আর কেউ দাঁড়ালেনই না। অভিষিক্ত তরুণ নাজমুলের ৬০ বলে ১২ হয়ে গেল ক্ষণিকের প্রতিরোধ। সৌম্য-মাহমুদউল্লাহ সেট হয়েও ইনিংস বড় করার দিকে আগ্রহ পেলেন না। বাকিরা তো সেট হওয়ার চেষ্টাও করেননি!
নবম উইকেটে কামরুল-তাসকিনের ৫১ রানের জুটিটাই হয়ে গেল ইনিংসের সর্বোচ্চ। এই সফরে যেটি মাত্র পঞ্চম ফিফটি বা এর বেশি রানের জুটি বাংলাদেশের!
উন্নতির ছাপ অবশ্যই আছে দলের খেলায়। কিন্তু দায়হীন ব্যাটিংয়ের কদর্য রংটা সেই ছাপগুলোকে আড়াল করে দিচ্ছে। আর তাই ‘উন্নতি’র তৃপ্তির ঢেকুর তোলার বদলে আত্মবিশ্লেষণ বোধ হয় বেশি জরুরি!
একটাই ‘আশা’র কথা, প্রায় এক মাসের দীর্ঘ এই ক্লান্তিকর সফরটা অবশেষে শেষ হচ্ছে। হয়তো আজই! কাজটা কঠিন, তবে প্রথম টেস্টের শেষ দিনের মতো নিউজিল্যান্ড একটু চেষ্টা করলে আজ হয়েও যেতে পারে!