বুধবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০১৭ ইং ৬ই বৈশাখ, ১৪২৪ বঙ্গাব্দ

কুটির শিল্পে অনিয়ন্ত্রিত বিপ্লব!

AmaderBrahmanbaria.COM
জানুয়ারি ১০, ২০১৭

ডেস্ক রিপোর্ট : বাংলাদেশে কুটির শিল্পের ক্ষেত্রে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা গেলেও সমন্বিত প্রয়াসের অভাবে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসছে না৷ অপরিকল্পিত কুটির শিল্পের প্রবৃদ্ধি তাই কার্যকর প্রবৃদ্ধি হিসেবে বিবেচনায় আসছে না৷

কুটির শিল্প করছেন এমন অনেকেই জানেন না যে এর নিবন্ধনের প্রয়োজন আছে৷ আবার অনেকে নিবন্ধনের বিষয়টি বুঝলেও কোথা থেকে নিবন্ধন নিতে হয়, তা জানেন না৷ ফলে কেউ যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর আর কেউবা স্থানীয়ভাবে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করেন৷ এর ফলে উদ্যোক্তারা যেমন নানা সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) ও তেমনি জানেনা তাদের সর্ম্পকে৷

২০১৪ সালে ‘বিসিক অতীত, বর্তমান, ভবিষ্যৎ: একটি সমীক্ষা’ শিরোনামে বিসিকের একটি প্রকাশনায় তাদের সর্বশেষ অবস্থা জানা যায়৷ সেখানে বলা হয়েছে ঢাকার কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়াও বিসিকের চারটি আঞ্চলিক কার্যালয়, ৬৪টি জেলা কার্যালয়, ৫৯ জেলায় ৭৪টি শিল্প নগরী, ১৫টি নৈপুণ্য বিকাশ কেন্দ্র এবং তিনটি পার্বত্য জেলার ২২টি উপজেলায় ৩২টি উৎপাদন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আছে৷

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর ২০১১ সালের এক জরিপে বলা হয়, সারাদেশে কুটির শিল্পের সংখ্যা আট লাখ ৩০ হাজার৷ আর বিসিকের নিজস্ব পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রয়েছে এক লাখ৷ এর মানে হলো, বিদ্যমান কুটির শিল্পের সিংহভাগই বিসিক-এ নিবন্ধিত নয়৷ জরিপ অনুযায়ী, যেসব কুটির শিল্প নিবন্ধন নিয়েছে তার মাত্র ৩.৭ শতাংশ বিসিকে নিবন্ধিত৷ তবে সারাদেশে যে কুটির শিল্প রয়েছে তার ৬৫ ভাগেরই কোনো নিবন্ধন নেই বলে দাবি করছে বিবিএস৷ নানা কর্তৃপক্ষের কাছে নিবন্ধিত কুটির শিল্প শতকরা ৩৫ ভাগ মাত্র৷

১৯৫৭ সালে প্রথম বিসিক-এর কার্যক্রম শুরু হয়৷ ১৯৬০ সালের দিকে বিসিক ঋণ দেয়ার পাশাপাশি শিল্পনগরী স্থাপনের কাজে হাত দেয়৷ বিসিক দাবি করছে, জিডিপিতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের অবদান ম্যানুফ্যাকচারিং খাতে ৫.২৭ ভাগ৷ আর সেবা খাতে ১০ শতাংশের বেশি৷ সরকার এই খাত থেকে ২০১৩-১৪ সালে ২,৪৯৯ কোটি ৭৮ টাকা আয়কর পেয়েছে৷

২০১৪ সাল পর্যন্ত বিসিক শিল্পনগরীতে ১৮,৮৯৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা বিনিয়োগ হয়েছে৷ কর্মসংস্থান হয়েছে ৫ লাখ ২৫ হাজার ১৪১ জনের৷

তবে বিসিকই বলছে যে, তারা তাদের উদ্দেশ্য বা টার্গেটে পৌঁছাতে পারছে না৷ অনেক ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প এখন রুগ্ন হয়ে পড়েছে৷ আর বিসিক শিল্প নগরীতে কোনো কোনো উদ্যোক্তা একাধিক প্লট নিয়ে ভারি শিল্প গড়ে তুলেছেন, যা বিসিকের নীতিমালাবিরোধী৷

বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি (নাসিব)-এর সভাপতি মির্জা নুরুল গনি শাওন ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘‘আসলে এখন আর ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিসিকের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই৷ আর কুটির শিল্প করলে যে বিসিকের অনুমোদন নিতে হবে তা বাধ্যতামূলক নয়৷ এই অনুমোদনের প্রক্রিয়াও অনেক জটিল৷ তাই অনেক উদ্যোক্তা আগ্রহ দেখান না৷”