নিজস্ব প্রতিবেদক : বন্দরনগরী চট্টগ্রামের পানি সমস্যার সমাধানের জন্য যেসব প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে ‘মদুনাঘাট পানি সরবরাহ প্রকল্প’ অন্যতম। আগামী বছরের শেষ দিকে এ প্রকল্প চালু হতে পারে। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের ৩৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে।সরেজমিনে দেখা যায়, হালদা নদীর পানি শোধন করে মদুনাঘাট এলাকায় কাজ চলতে থাকা প্রকল্পটির কাজ চলছে দ্রুতগতিতে। হালদার পাড়ে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহ বলেন, ‘মদুনাঘাট প্রকল্পের কাজ যে গতিতে এগিয়ে চলছে তাতে বলা যায় এক বছর আগেই উৎপাদনে আসবে। ২০১৮ সালে এটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আগামী বছরের শেষে তা চালু করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি তিন শিফটে কাজ করছে প্ল্যান্টে।’
তিনি বলেন, ‘কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্প থেকে ১৪ কোটি লিটারের পানি পুরোপুরি না ছাড়তেই নগরীর ৪০ থেকে ৫০ বছরের পুরনো পাইপ ফেটে পানি বের হয়ে যাচ্ছে। আর মদুনাঘাটের পানি আগামী বছর ছাড়া শুরু করলে সব পুরনো পাইপ ফেটে যাবে। আর এতে আগামী ২০২০ সাল নাগাদ চলবে এসব ফাটাফাটির কাজ। এ সময়ের মধ্যে আমরা নগরীর সব পাইপ লাইন বদলে নতুন পাইপ লাগাব।’
এদিকে প্রকল্পের অগ্রগতি প্রসঙ্গে চিটাগং ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্পের উপ-প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এই প্রকল্পের অধীনে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ ও পাইপ লাইন বসানোর কাজের পাশাপাশি ড্রেনেজ ও সুয়্যারেজ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নের কাজ চলছে। এছাড়া ওয়াসার ক্যাপাসিটি বিল্ডিং বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের কাজও রয়েছে। পুরো প্রকল্পের প্রায় ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে।’
প্ল্যান্টের অগ্রগতি সম্পর্ক তিনি বলেন, ‘প্ল্যান্টে এখন স্থাপনা নির্মাণ কাজ চলছে। প্রকল্পের ৩৫ শতাংশ শেষ হয়েছে।’
মোহরা কিংবা কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পের সাথে এই প্রকল্পের কোনো পার্থক্য রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন,‘ মোহরা ও কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পে প্রি-সেডিমেন্ট বেসিন থাকে কিন্তু এই প্রকল্পে জায়গা স্বল্পতার কারণে তা রাখা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পে টিউব স্যাটেলার ব্যবহার করা হবে। এতে পলি ও পানিতে থাকা ফর্কগুলো অপসারণ করা যাবে। এছাড়া স্লাজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট করা হচ্ছে, যা মোহরা কিংবা কর্ণফুলী প্লান্টে নেই।’
উল্লেখ্য, হালদা নদীর পানি পরিশোধন করে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে এক হাজার ৭৮ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়ন হচ্ছে চিটাগং ওয়াটার সাপ্লাই ইমপ্রুভমেন্ট অ্যান্ড স্যানিটেশন প্রকল্প। ১৯৯৮ সালের দিকে কোরিয়ান সরকারের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কথা ছিল। কিন্তু সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ না দেয়া এবং পরবর্তীতে মামলার কারণে সেসময় তা বাতিল হয়ে যায়। এরপর ২০১১ সালে নতুন করে এই প্রকল্পে অর্থায়ন করে বিশ্বব্যাংক এবং চলতি মাসে এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা। তবে সংশোধনের মাধ্যমে এর মেয়াদ আরো দুই বছর বাড়ানো হয়েছে এবং তা প্রি-একনেক সভায় অনুমোদন পেয়ে এখন একনেক সভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে।