নিউজ ডেস্ক : গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলায় জড়িত জঙ্গিরা ক্যাপটাগন বা এ জাতীয় অন্য কোনো উত্তেজক মাদক সেবন করেনি। তারা ঠান্ডা মাথায় হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের পরীক্ষাগারে গুলশানের হামলায় জড়িত ও অভিযানে নিহত পাঁচ জঙ্গির রক্তের নমুনা ও চুলের রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে এ তথ্য এসেছে। কেবল গুলশানে হামলার পাঁচজন নয়, ঢাকার কল্যাণপুর, কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়াসহ সম্প্রতি পুলিশের বিভিন্ন অভিযানে নিহত জঙ্গিদের রক্ত ও চুলের রাসায়নিক পরীক্ষা করে একই ফল পাওয়া গেছে বলে পুলিশের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র জানিয়েছে।
এফবিআইয়ের পরীক্ষাগার থেকে রাসায়নিক পরীক্ষার এই ফলাফল সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগকে জানানো হয়েছে বলে গতকাল বৃহস্পতিবার একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। এই কর্মকর্তা নাম প্রকাশ করতে রাজি হননি।
পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গিদের বীভৎসতার মাত্রা দেখে অনেকের সন্দেহ হয়েছিল তারা ক্যাপটাগনের মতো কোনো উত্তেজক মাদক সেবন করেছিল কি না। এ সন্দেহ সৃষ্টির আরেকটি কারণ হলো, গত বছরের নভেম্বরে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সিরিয়া ও ইরাকভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের যোদ্ধাদের মধ্যে ক্যাপটাগন নামের একটি উত্তেজক মাদক সেবনের ধারা তৈরি হয়েছে। এ কারণে এই ওষুধটি আন্তর্জাতিক মহলে ‘আইএস ড্রাগ’ নামে পরিচিতি পেয়েছে। ক্যাপটাগন সেবনের পর আইএসের জঙ্গিরা একনাগাড়ে বেশ কয়েক দিন জেগে থাকতে পারে। কোনো রকম সহমর্মিতাবোধ তাদের মধ্যে কাজ করে না। একের পর এক মানুষ খুনের পরও তাদের মধ্যে কোনো বোধ জাগ্রত হয় না।
গতকাল পুলিশের কাউন্টার টেররিজম বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, গুলশান হামলার পরও ক্যাপটাগন প্রসঙ্গটি আলোচনায় আসে। এরপর এফবিআইয়ের পরামর্শে তাঁরা নিহত জঙ্গিদের শরীর থেকে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করেন। নমুনা হিসেবে হৃৎপিণ্ড থেকে ১০ মিলিমিটার ও শরীরের অন্য অংশ থেকে আরও ১০ মিলিমিটার করে রক্ত এবং মাথার সামনে থেকে ১০টি এবং পেছন থেকে ১০টি চুল করে সংগ্রহ করেন চিকিৎসকেরা। এসব নমুনা এফবিআইয়ের পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়। পরীক্ষার পর এফবিআই থেকে জানানো হয়েছে, নিহত হওয়ার আগে এসব জঙ্গি কোনো ধরনের মাদক গ্রহণ করেনি।প্রথম আলো