নিউজ ডেস্ক : দেশে ফিরে জনতার হর্ষধ্বনি, স্লোগান, অভিনন্দন ও ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার পথজুড়ে জনতার ঢল নামে। পরে সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে তিনি গণভবনে পৌঁছান। এ সময় রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা প্রধানমন্ত্রীকে দেখে গান গেয়ে স্বাগত জানান।
বন্যা সুর তোলেন, ‘আজি বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি, তুমি এই অপরূপ রূপে বাহির হলে জননী! ওগো মা, তোমায় দেখে দেখে আঁখি না ফিরে’। এ সময় উপস্থিত অন্যরা তাঁর সঙ্গে খালি গলায় সুর মেলান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাসভবন গণভবনে পৌঁছানোর পরে তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান শিল্পী, কবি, সাহিত্যিক, ক্রিকেটারসহ গুণীজনেরা। জাতিসংঘে গিয়ে দুটি সম্মানজনক পুরস্কার লাভ করায় তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম। এরপরে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সবার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি উড়োজাহাজে যুক্তরাষ্ট্র-দুবাই হয়ে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দর থেকে গণভবনের যাওয়ার পথে রাস্তার দুই পাশে দাঁড়িয়ে পতাকা উড়িয়ে, ফুল ছিটিয়ে, হাত নেড়ে ও মুহুর্মুহু স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান হাজার হাজার নেতা-কর্মী। এ সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাড়িতে বসে হাত নেড়ে উপস্থিত জনতার অভিনন্দনের জবাব দেন। বিমানবন্দর থেকে গণভবনে পৌঁছাতে শেখ হাসিনার সময় লাগে প্রায় ৩৫ মিনিট।
বিমানবন্দর থেকে গণভবন পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে জনতার ঢল নামে। এ সময় তাঁরা হাতে থাকা জাতীয় ও দলীয় পতাকা উড়িয়ে স্বাগত জানান। কখনো ছিটিয়ে দেন ফুল।
বিমান থেকে নেমে আসার পর সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ফুলের তোড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এ সময় শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, জনপ্রশাসনমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র, মন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সাংসদ এবং পদস্থ সরকারি কর্মকর্তারাও প্রধানন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন।
বিমানবন্দর, খিলক্ষেত, কুড়িল বিশ্বরোড, কাকলি, বনানী, মহাখালী, জাহাঙ্গীর গেট, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়, বিজয় সরণি থেকে গণভবন পর্যন্ত পুরো সড়কই ছিল আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দখলে। নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, সাভার, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুরসহ ঢাকা এবং ঢাকার আশপাশ থেকে শত শত বাস-ট্রাকে করে, বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাতে আসেন।
জাতীয় সংসদ ভবনের উত্তর পাশের ক্রিসেন্ট লেকসংলগ্ন সড়কে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, হুইপ আতিউর রহমান, শহীদুজ্জামান সরকার, ইকবালুর রহিম, শাহাব উদ্দিনসহ অন্য সাংসদেরা প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান।
এ ছাড়া যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন স্থানে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
প্রধানমন্ত্রী কানাডায় গ্লোবাল ফান্ড এবং যুক্তরাষ্ট্রে জাতিসংঘের ৭১তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে ১৪ সেপ্টেম্বর ঢাকা ছেড়েছিলেন।