গাজীপুরের কেন্দ্রীয় কারাগারে মানবতাবিরোধী অপরাধী মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর হতে পারে। রাষ্ট্রপতির কাছে তাঁর প্রাণভিক্ষার আবেদন ও সেই আবেদন গ্রহণ, না নাকচ হবে, এই সিদ্ধান্তের ওপর তা নির্ভর করছে বলে কারাগার সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
কারা অধিদপ্তরের এক উচ্চপর্যায়ের সূত্র জানায়, মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতে ইসলামীর এই কেন্দ্রীয় নেতার ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন গতকাল মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ করে দেন। এর পরপরই ৬৩ বছর বয়সী কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকরের সব ধরনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকজন জল্লাদকে এ জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত কারা মহাপরিদর্শক লে. কর্নেল ইকবাল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, মীর কাসেম আলীর ফাঁসি কাশিমপুর, না কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার, এই দুটির মধ্যে কোথায় কার্যকর করা হবে, এখনো এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। ফাঁসি কার্যকর করতে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। তবে মীর কাসেম আলীর রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষার আবেদনের ওপর নির্ভর করছে।
মীর কাসেম আলী কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২-এ বন্দী রয়েছেন। ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন খারিজ হওয়ার রায় মীর কাসেম আলীকে পড়ে শোনানো হয়েছে। আজ বুধবার সকালে কাশিমপুর কারাগারে মীর কাসেমকে রায় পড়ে শোনায় কারা কর্তৃপক্ষ। কাশিমপুর কারাগার-২-এর কারা তত্ত্বাবধায়ক প্রশান্ত কুমার বণিক বলেন, গতকাল দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি কাশিমপুর কারাগারে আসে। আজ সকাল সাড়ে সাতটার দিকে মীর কাসেমকে রায় পড়ে শোনানো হয়।
এরপর দুপুরে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পরিবারের সদস্যরা কাশিমপুর কারাগারে গেছেন।
এর আগে গতকাল সকালে এই রায় ঘোষণার পর বিকেলে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। বিকেলেই রায়ের অনুলিপি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হয়ে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে যায়। সেখান থেকে রায়ের অনুলিপি কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হয়।
রিভিউ খারিজের মধ্য দিয়ে মীর কাসেমের আইনি লড়াইয়ের শেষ ধাপের ইতি ঘটেছে। এখন তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন। এই সুযোগ তিনি নেবেন কি না, তা তাঁর আইনজীবী বা পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত জানানো হয়নি।
প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ হলে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না।