অনলাইন ডেস্ক : বর্তমান সময়ে আমাদের বেশির ভাগ সময় কেটে যায় অনলাইনে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ফেসবুক, গুগলসহ সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোতেই সময় কাটে আমাদের। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি দেখা হয় যে ওয়েবসাইট সেটি হলো ইউটিউব। সার্চ ইঞ্জিন গুগল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুককে পেছনে ফেলে বর্তমানে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট ইউটিউব!
ওয়েব ট্রাফিক ডাটা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান অ্যালেক্সার র্যাংকিংয়ে উঠে এসেছে এই তথ্য। আজ ১ আগস্ট অ্যালেক্সার র্যাংকিংয়ে দেখা গেছে বাংলাদেশ থেকে সর্বাধিক ভিজিট করা হয় এমন ওয়েবসাইটের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইউটিউব। এ থেকেই বোঝা যায়, বাংলাদেশের ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনলাইনে ভিডিও দেখার প্রবণতা বাড়ছে।
সর্বাধিক ভিজিটকৃত ওয়েবসাইটগুলোর তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করে থাকে অ্যালেক্সা। দেশভিত্তিক ওয়েবসাইটের তালিকা যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে বৈশ্বিক একটি তালিকা। বিশ্বজুড়ে প্রতিনিয়ত ভিজিট করা হয় এমন তালিকায় বিশ্বজুড়ে ইউটিউবের অবস্থান দ্বিতীয়। আর প্রথম অবস্থানে রয়েছে সার্চ ইঞ্জিন গুগল।
টেলিভিশনের অনুষ্ঠানমালা ও নাটক দেখার জন্য ইউটিউবে আসেন বাংলাদেশের দর্শকশ্রোতারা। কারণ ইউটিউবে নিজের পছন্দমতো সময়ে বিরতিহীনভাবে ভিডিও দেখতে পারেন তাঁরা। ভিডিও কনটেন্টের জনপ্রিয়তার কারণে চলচ্চিত্রের ট্রেইলার বা গানের ভিডিও এখন চলচ্চিত্র মুক্তির আগে ইউটিউবে প্রকাশ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেল ইউটিউবে তাদের চ্যানেল সরাসরি দেখার ব্যবস্থা করেছে।
বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনটিভিও ইউটিউবের প্ল্যাটফর্মে শক্ত অবস্থান তৈরি করেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউটিউবে সক্রিয়ভাবে যাত্রা শুরু করে এনটিভি। ইউটিউবে এনটিভির ভেরিফায়েড চ্যানেলগুলোতে সর্বমোট সাবস্ক্রাইবার রয়েছেন এক লাখ ১৩ হাজারেরও বেশি। যা ইউটিউব সাবস্ক্রাইবারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। একদিনে গড়ে এনটিভির ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে ৪৬ লাখ মিনিট সমপরিমাণ সময়ের ভিডিও দেখে থাকেন দর্শকরা। দিনের হিসেবে যা প্রায় আট বছরের সমান! এ ছাড়া এনটিভির সম্প্রচার সরাসরি ইউটিউবে দেখতে পারেন দর্শকরা।
শুধু ভিডিও স্ট্রিমিং নয়। ইউটিউবে ব্যবহারকারীরা ভিডিও আপলোড, ডাউনলোড, শেয়ার, রেটিং ও কমেন্ট করতে পারেন। বিনামূল্যে এসব ভিডিও দেখতে পারেন দর্শকশ্রোতারা। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার সান ব্রুনোতে অবস্থিত ইউটিউবের সদর দপ্তর। ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পেপ্যালের সাবেক তিন কর্মী মিলে প্রতিষ্ঠা করেন এই ভিডিও স্ট্রিমিং সাইটটি। ইউটিউবের উদ্যোক্তাদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত জাওয়াদ করিমও রয়েছেন। বাকি দুজন হলেন স্টিভ চ্যান ও শাদ হার্লি। সাইটটির সম্ভাবনা বুঝতে পেরে ২০০৬ সালের নভেম্বরে ১৬৫ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিময়ে ইউটিউব কিনে নেয় সার্চ ইঞ্জিন গুগল। এখনো ইউটিউবের মালিকানা গুগলের হাতেই রয়েছে।
২০০৬ সালে গুগল কিনে নেওয়ার পরও প্রথম কয়েক বছর লাভের মুখ দেখেনি ইউটিউব। তবে এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে দিন দিন। গত বছর ব্যবসা বিষয়ক মার্কিন দৈনিক ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৫ সালে যাত্রা শুরু করলেও ইউটিউবের আয় বাড়ে ২০১০ সালের দিকে। ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৩ সালে ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার আয় করে ইউটিউব। পরের বছর তাদের আয় আরো ১০০ কোটি ডলার বৃদ্ধি পায়।