ব্যস্ত সময় পার করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পাট চাষিরা
---
রিয়াসাদ আজিম ॥ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় চলতি মৌসুমে সোনালী আঁশ পাটের ভাল ফলন হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার জলাশয়ে জাগ দেয়া পাট থেকে আঁশ ছড়ানো ও ধোয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষাণ-কৃষাণীরা। ইতিমধ্যেই জেলার পাট চাষীদের মধ্যে ব্যাপক আনন্দ এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। পাট বোনার পর সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় পাটের গাছ সাত থেকে আট ফুট লম্ভা হয়েছে। আর পাট গাছ লম্ভা হওয়ায় পাটও বেশি হয়েছে বলে জানিয়েছে পাট চাষিরা। নতুন ওঠা পাটের বাজারও বেশ চাঙ্গা। মৌসুমের শুরুতেই ভাল দাম পাওয়ায় চাষীরাও খুশি।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা স্থানভেদে পাট কেটে নালা, খাল বিল ও ডোবায় জাগ দেয়া, আঁশ ছড়ানো কাজে ব্যস্ত কৃষকরা। আবার কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে নারী-পুরুষ ও শিশুদের অংশগ্রহণে পাট ছড়ানোর কাজ চলছে।
পাটের আঁশ ছাড়ানোর কাজে নিযোজিত নারী শ্রমিকরা জানান, পাট মৌসুমে তারা সংসারের কাজের পাশাপাশি ২০ আটি পাট আঁশ ছড়াচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকায়। আবার পাটকাঠি নেয়ার শর্তে তারা পাট আঁশ ছাড়ানোর কাজ করছেন। এতে করে সংসারের ব্যায় নির্বাহে কিছুটা হলেও সহযোগিতা করতে পারছেন তারা।
কৃষক জাফর ভূইয়া জানায়, চলতি মৌসুমে তিনি ১০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেন। পাট বোনার পর সময়মত বৃষ্টি হওয়ায় পাটের ফলন ভাল হয়েছে। গত কয়েক বছর পর এবছর পাটের ভাল ফলন হওয়াই তিনি খুশী।
স্বপন ভূইয়া জানান, এবছর প্রতি বিঘা জমিতে সাত থেকে আট মণ পাট হয়েছে। প্রতি মণ পাট বিক্রয় হচ্ছে ১২শ থেকে ১৩শ টাকায়। এবং প্রতি ২০ আঁটি পাটকাঠি বিক্রি হচ্ছে ২শ ৫০ থেকে ৩শ টাকায়।
জেলা কৃৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৩ হাজার ৯ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়েছে। এ বছর উৎপাদন হয়েছে ৪০হাজার ২শ ৫০ বেল পাট।
এ ছাড়া পাট চাষে কৃষকদের আধুনিক চাষ পদ্ধতিসহ বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এর উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো: বছির উদ্দিন জানান, পাট চাষের জন্য প্রয়োজনীয় সার, ভালজাতের বীজ ও কীটনাশক ন্যায্যমূল্যে পর্যাপ্ত পরিমানে সরবরাহের পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিয়মিত তদারকি করেছে। আবহাওয়া অনুকুল থাকায় জেলায় চলতি মৌসুমে পাটের ভাল ফলন হয়েছে।
সরকারি সহায়তা, বীজ, সার, কীটনাশকের পর্যাপ্ত সরবরাহ করা হলে আগামী মৌসুমে কৃষকরা আরো নতুন জমি সোনালী আঁশ পাট চাষের আওতায় আনতে আগ্রহী হয়ে উঠবে এমনটাই সকলের প্র্যত্যাশা।